৪০ বছর শিক্ষার আলো ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত শিক্ষক

৪০ বছর শিক্ষার আলো ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত শিক্ষক

দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ছড়িয়েছেন শিক্ষার আলো। সংসারের মতো আগলে রেখেছেন প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে। নিজ হাতে প্রতিষ্ঠানের নানা পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন শিক্ষক মোহাম্মদ আলী। জড়িয়েছেন মায়ার বন্ধনে। তাই প্রিয় শিক্ষকের শেষ কর্মজীবনকে স্মরণীয় করে রাখার কথা ভোলেননি শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা। আয়োজন দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন শিক্ষক। 

দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ছড়িয়েছেন শিক্ষার আলো। সংসারের মতো আগলে রেখেছেন প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে। নিজ হাতে প্রতিষ্ঠানের নানা পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন শিক্ষক মোহাম্মদ আলী। জড়িয়েছেন মায়ার বন্ধনে। তাই প্রিয় শিক্ষকের শেষ কর্মজীবনকে স্মরণীয় করে রাখার কথা ভোলেননি শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা। আয়োজন দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন শিক্ষক। 

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর)  দুপুরে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার ভীমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ আলীকে রাজকীয় বিদায়ী সংবর্ধনা দেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটি।

এর আগে শুরুতেই পাপড়ি ছিটিয়ে ফুলের মালা দিয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ আলীকে বরণ করে নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারপর স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বিদায়ী শিক্ষককে ক্রেস্টসহ বিভিন্ন উপহার তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও ভীমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী অবসরপ্রাপ্ত  শিক্ষককে বিদায় সংবর্ধনা জানাতে আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।

জানা যায়,  শিক্ষক মোহাম্মদ আলী ১৯৬৪ সালে চাটখিল পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের মৃত মো. মজিবুল হক মাস্টারের ছেলে। তিনি হীরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৮৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষাকতা শুরু করেন। ১৯৮৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে  ভীমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হন। দীর্ঘ ৩৯ বছর ৯ মাস তিনি শিক্ষকতা করেছেন। দীর্ঘ শিক্ষক জীবনে শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো স্নেহ মমতায় বড় করে তুলেছেন। বিদায় বেলায় তার স্বীকৃতিও পেলেন। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ফিরলেন অবসর জীবনে। 

এ আয়োজন দেখে শিক্ষক মোহাম্মদ আলী আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। বিদায়ী শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার চার দশক শিক্ষকতা জীবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। শেষ দিনে আমাকে তারা যে সম্মান দিয়েছে, এটি আমার জীবনের অনেক বড় পাওয়া। তারা আমার কাছে সন্তানের মতো ছিল, আছে এবং থাকবে। আজ আমি বিদায় সংবর্ধনা নিচ্ছি, কিন্তু আমার দোয়া রেখে গেলাম। সন্তানেরা লেখাপড়া করে যখন অনেক বড় হবে, তখন আমাদের কথা মনে পড়বে। আমি চাই তারা  নিজেদেরকে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।

বিদায় সংবর্ধনার সভাপতি ভীমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, বয়সে উনি আমার বাবার সমতুল্য হলেও প্রাতিষ্ঠানিক কাজের বেলায় ছিলেন দুরন্ত। এই ভীমপুর স্কুল উনার কাছে ঋণী। তিনি আমাদের ভিত্তি গড়ে দিয়েছেন। তার বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতে সামান্য আয়োজন করেছি। এমন আয়োজন অন্য শিক্ষকদের একজন ভালো শিক্ষক হিসেবে গড়ে উঠতে অনুপ্রাণিত করবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ফিরোজ আলম বলেন, উনি  আমার শিক্ষক, শিক্ষক যখন তার চাকরিজীবন শেষে বাড়ি ফিরে যান তখন তিনি অনেক কষ্ট পান। সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের রেখে চলে যাওয়া খুব কষ্টের। বিদায়ের কষ্ট কিছুটা কমানোর জন্যই কর্তৃপক্ষ ব্যতিক্রমী এমন আয়োজন করেছে। আমার ধারণা চাটখিলে এই প্রথম এমন উৎসবের বিদায় হলো। প্রতিটি শিক্ষকের বিদায় এমন হওয়া উচিত।

বিদায়ী সংবর্ধনায় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই, শিক্ষক বেলাল হোসেন, নাছির উদ্দিন, বিদ্যালয়ের সভাপতি আনোয়ারুল হোক মিন্টু, প্রাক্তন শিক্ষার্থী আমির হোসেন জাহিদ, নিজাম উদ্দিন ভুইঞা, শেখ ফরিদ সোহেল, মোশারফ হোসেন ইমাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। 

হাসিব আল আমিন/আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *