বানের পানিতে ভাসছেন বুড়িচংয়ের দুই লাখ মানুষ

বানের পানিতে ভাসছেন বুড়িচংয়ের দুই লাখ মানুষ

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে কুমিল্লার ১৪ উপজেলা। কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে ঢলে জেলার অন্তত ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয়াবহতা ছুঁয়েছে বুড়িচং উপজেলাকে।

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে কুমিল্লার ১৪ উপজেলা। কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে ঢলে জেলার অন্তত ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয়াবহতা ছুঁয়েছে বুড়িচং উপজেলাকে।

গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর পানিতে তলিয়ে যায় বুড়িচং উপজেলা। উপজেলার সবগুলো ইউনিয়ন বানের পানিতে সয়লাব। পানিবন্দি হয়েছেন ২ লাখ মানুষ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে দুর্যোগের কঠোর ভোগান্তির সর্বোচ্চ শিখরে আছেন এসব এলাকার বানভাসি মানুষরা।

এসব মানুষদের অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন। তবে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। বানের পানি কমে গেলে নিজ ভিটেমাটিতে ফেরার অপেক্ষা আর সব হারানোর আক্ষেপ নিয়ে প্রহর কাটছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের।

শনিবার (২৪ আগস্ট) বেলা ১১টা পর্যন্ত বুড়িচংয়ের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। বাকি সব মানুষ আছেন খোলা আকাশের নিচে। ৫০ হাজার পানিবন্দি পরিবারের অপেক্ষা কেবল বন্যা শেষ হয়ে গেলে পুরোনো অবস্থায় ফিরে যাওয়ার।

এদিন সকালে বন্যা কবলিত বুড়িচং উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারিদিকে থই থই করছে বানের পানি। বাদামি রঙের এসব ঘোলা পানিতে ডুবে গেছে মাছের ঘের, হেক্টরে হেক্টরে ফসলি জমি, গরুর খামার। পানিতে তলিয়ে আছে ঘরবাড়ি। নিরাপদ আশ্রয় নেওয়া অনেকে পানি সাঁতরিয়ে ভিটেমাটি দেখে আসছেন।

ইছাপুরা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, আমার জীবনে এত পানি কখনো দেখিনি। আমাদের সবকিছু তলিয়ে গেছে।

আজমীর হোসেন নামে খাড়াতাইয়া এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, মুহূর্তের মধ্যে এত পানি কোথা থেকে এলো বুঝি না। যে ক্ষতিটা আমাদের হয়েছে, জানি না কী দিয়ে পোষাবো।

এদিকে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে কুমিল্লার আকাশ রৌদ্রময়। শনিবার সকালেও ঝলমলে রোদ দেখা গেছে কুমিল্লার আকাশজুড়ে। বৃষ্টি না থাকলেও পানি কমছে খুবই কম আকারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র মতে, বাঁধ ভাঙার পর থেকে গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতি ঘণ্টায় ১ সেন্টিমিটার পানি কমছে। যা বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য অপ্রতুল।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান বলেন, এখনও বিপৎসীমার বেশ ওপরে গোমতীর পানি। আমরা এখনও বেশি ঝুঁকিতে আছি। পরিস্থিতির উন্নতি হতে আরও সময় লাগবে।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান ঢাবা পোস্টকে বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একটা মানুষও যেন অভুক্ত না থাকে আমরা সেভাবে কাজ করছি।

আরিফ আজগর/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *