গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে ছয়টি লিফটের মধ্যে চারটিই নষ্ট পড়ে আছে। এতে রোগী নিয়ে সুউচ্চ এই হাসপাতাল ভবনে ওঠা-নামা করতে গিয়ে অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে ছয়টি লিফটের মধ্যে চারটিই নষ্ট পড়ে আছে। এতে রোগী নিয়ে সুউচ্চ এই হাসপাতাল ভবনে ওঠা-নামা করতে গিয়ে অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৫ তলা হাসপাতাল ভবনটিতে মোট ছয়টি লিফট রয়েছে। এর মধ্যে চারটিই নষ্ট। ১৩তলা পর্যন্ত দুটি লিফট চালু আছে। দক্ষিণ পাশের এক নম্বর লিফটি প্রায় ছয় মাস ধরে অকেজো পড়ে আছে। চার, পাঁচ ও ছয় নম্বর লিফট প্রায় ১০-১২ দিন ধরে অকেজো।
গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. নাসির উদ্দিন পিত্তথলির পাথর নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালে ছয়টি লিফটের মধ্যে চারটিই নষ্ট। সচল দুটি লিফটে ওঠার জন্য প্রতিনিয়ত রোগীদের ভিড় লেগেই থাকে। এতে রোগী ও তাদের স্বজনরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তিনি নিজেও ২৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর লিফটে উঠতে পেরেছেন। তার মতো অনেককেই এভাবে লিফটে ওঠতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
গাজীপুর মহানগরীর নলজানি এলাকার বাসিন্দা সুফিয়া বেগম বলেন, অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে আসলে তাকে সার্জারি বিভাগে ভর্তির পরামর্শ দেন হাসপাতালের ডাক্তার। এজন্য তার স্বামীকে নিয়ে তাকে আট তলায় উঠতে হচ্ছে। লিফটে ওঠার জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরও উঠতে না পেরে পাশের অপর লিফটে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকি। তারপরও ভিড় ঠেলে উঠতে না পেরে স্বামীকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে বিকল্প পথ ধরে তুলতে গিয়ে অনেক ভোগান্তির শিকার হন।
ভোগড়া মধ্যপাড়া নায়েব বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা লুৎফর রহমান জানান, গত সোমবার ওই হাসপাতালের ১০ তলায় ভর্তি এক রোগী দেখতে গিয়ে একই বিড়ম্বনায় পড়েন। শেষে তাকে সিঁড়ি ভেঙেই ১০ তলা থেকে নিচে নামতে হয়।
লিফট অপারেটর মো. সিয়াম হোসেন বলেন, ছয়টি লিফটের মধ্যে চারটি লিফটই নষ্ট পড়ে আছে। তার মধ্যে দক্ষিণ পাশের ১ নম্বর লিফটি প্রায় ছয় মাস ধরে অকেজো পড়ে আছে। চার, পাঁচ ও ছয় নম্বর লিফট প্রায় ১০-১২ দিন ধরে অকেজো হয়ে আছে। বর্তমানে হাসপাতালটির ১৫তলা ভবনের ১৩তলা পর্যন্ত দুটি লিফট চালু আছে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, লিফটগুলো গাজীপুর গণপূর্ত বিভাগ তদারকি করেন। এ সমস্যার সমাধানের জন্য গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই লিফটগুলো সচল করা হবে বলে জানিয়েছেন গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে এক নম্বর লিফটি দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে কেন তা তদন্ত করে দেখা হবে।
গণপূর্ত বিভাগ গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম বলেন, ময়লা জমে ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে লিফটগুলো বিকল হয়ে পড়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই আরও দুটি লিফট সচল হয়ে যাবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই এক নম্বর লিফটি বন্ধ রয়েছে।
শিহাব খান/এএমকে