ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর নামে সোনালী ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতি

ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর নামে সোনালী ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতি

মাদারীপুরের রাজৈর সোনালী ব্যাংক থেকে অভিনব কায়দায় রাজু শেখ (৩৫) নামে এক ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর নামে ঋণ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক থেকে টাকা সাহায্য এনে দেওয়ার কথা বলে তার নামে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। চার মাস পর কিস্তির টাকা নিতে তার বাড়িতে যায় ব্যাংকের লোকজন। এতেই বাধে বিপত্তি। বর্তমানে ভিক্ষাবৃত্তি করা রাজুর চোখে মুখে নেমে আসে হতাশা। সাহায্য চাইতে গিয়ে হলেন প্রতারণার শিকার।

মাদারীপুরের রাজৈর সোনালী ব্যাংক থেকে অভিনব কায়দায় রাজু শেখ (৩৫) নামে এক ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর নামে ঋণ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক থেকে টাকা সাহায্য এনে দেওয়ার কথা বলে তার নামে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। চার মাস পর কিস্তির টাকা নিতে তার বাড়িতে যায় ব্যাংকের লোকজন। এতেই বাধে বিপত্তি। বর্তমানে ভিক্ষাবৃত্তি করা রাজুর চোখে মুখে নেমে আসে হতাশা। সাহায্য চাইতে গিয়ে হলেন প্রতারণার শিকার।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতারণার শিকার রাজু মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার নরার কান্দি দাসের বাগান গ্রামের মৃত শেখ তছলিমের ছেলে। তিনি ঢাকা থেকে রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। তার রোজগারের টাকা দিয়ে ভালোই চলছিল সংসার। হঠাৎ তার শরীরে ধরা পড়ে মরণব্যধি ক্যান্সার। এজন্য বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েই বিক্রি করতে হয়েছে সহায় সম্বল। এরপরে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে চলে আসেন নরারকান্দির গ্রামের বাড়িতে। এলাকার লোকের সাহায্য সহযোগিতায় কয়েকদিন ওষুধ কিনতে পারলেও জুটতো না ছেলেমেয়ের খাবার। তারপরও অসুস্থ শরীর নিয়ে বিভিন্ন বাজারে ঘুরে মানুষের কাছে হাত পেতে যা পেতেন খাবারের টাকা হলেও হতো না ওষুধ কেনার টাকা।

একদিন রাজৈর বাজার সোনালী ব্যাংকের নিচে কিছু লোকের কাছে সাহায্য চাইতে গেলে এক প্রতারক বলে সোনালী ব্যাংক থেকে চিকিৎসার জন্য সাহায্য দেয়। তখন তিনি প্রতারকের কথায় রাজি হলে প্রতারক শর্ত দেয় ২০ হাজার টাকা এনে দিলে তাকে দিতে হবে ৫ হাজার টাকা। ওষুধ এবং ছেলেমেয়ের খাবারের কথা চিন্তা করে তিনি রাজি হন প্রতারকের কথায়। তাদের দেওয়া একটি ফরমে সই করার পরে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপির সাথে স্ত্রী ও তার ছবি দেওয়ার তিন ঘণ্টা পরে ব্যাংকে বসে তাকে ১৬ হাজার টাকা হাতে দিয়ে চলে যায় প্রতারক চক্র।

এর চার মাস পরে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মন্ডল তার নামে একটি কৃষি লোন আছে বলে কিস্তির টাকা নিতে পাঠায়। এরপরেই জানতে পারেন যে প্রতারকরা তার কাগজ-পত্র দিয়ে ৭০ হাজার টাকা তার নামে ঋণ করে বাকি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন।

প্রতারণার শিকার রাজু শেখের প্রতিবেশীরা জানান, সরলতার সুযোগ নিয়ে ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তারা প্রতারকের সাথে মিলে প্রতারণা করেছে। এভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করছি।

প্রতারণার শিকার ক্যান্সার আক্রান্ত রাজু শেখ বলেন, আমাকে সাহায্য দেওয়ার কথা বলে নিয়ে আমার সাথে প্রতারণা করেছে। আমিতো দিন এনে দিন খাইতে আমার কষ্ট হয়। আমি ভিক্ষা করে চলি। আমার সাথে যারা প্রতারণা করছে আমি তাদের বিচার চাই।

মাদারীপুর জেলা জর্জ কোর্টের আইনজীবী সোহেল আহমেদ বলেন, ব্যাংকের লোকের সাথে দালালের একটা সম্পর্ক থাকতে পারে। দালাল এবং ব্যাংকের কর্মকর্তা মিলে মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত এবং ভুক্তভোগী যদি মামলা করতে চায় তাহলে আমরা তাকে আইনি সহায়তা দেব। 

রাজৈর সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার প্রশান্ত কুমার মন্ডল জানান, রাজুর সাথে যে বিষয়টি ঘটেছে সেটা আমরা খতিয়ে দেখব। তার নামে যে লোন হয়েছে তা আমরা ক্লোজ করে দিয়েছি। আর ব্যাংকের কেউ যদি এর সাথে যুক্ত থাকে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। 

আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *