বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্রী মাইশা ফৌজিয়া মিম। তার মৃত্যুর ঘটনার বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্রী মাইশা ফৌজিয়া মিম। তার মৃত্যুর ঘটনার বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভিসি ভবনে উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের সাথে দেখা করে দাবী জানান।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুয়াকাটা থেকে বরিশালগামী নারায়নগঞ্জ ট্রাভেলস পরিবহনের চাপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কের ভোলার মোড় এলাকায় মাইশা নিহত হন। মাইশা রাস্তা পার হওয়ার সময়ে হাত উচু করে সংকেত দিয়ে পার হচ্ছিলেন। কিন্তু বেপরোয়া বাসটি তাকে এসে চাপা দেয়।
মাইশাকে চাপা দেওয়ার পরে বাসটির চালক না থেমে দ্রুত চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। শিক্ষার্থীরা গাড়িটিকে ধাওয়া দিয়ে দপদপিয়া সেতুর টোল প্লাজায় আটক করে। এরপর বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
তার মৃত্যুর পর সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে উপাচার্যকে ১০ দফা দাবি দিয়ে রাত ১টা ৪০ মিনিটে সড়ক ছাড়েন তারা। দাবি পূরণ না হলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে পুনরায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করবেন তারা।উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন বলেন, আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার চাই। আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। নাহলে আমার শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে কঠোর অবস্থান থেকে যা যা করা দরকার আমরা তাই করতে বাধ্য হবো।প্রক্টর ড. রাহান হোসাঈন ফয়সাল বলেন, শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ১০ দফা দাবীগুলো হলো বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে মাইশা নিহতের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার, নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বাসের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার করে গণমাধ্যমে প্রচার করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে গাড়ি চলাচলে গতিসীমা নির্ধারণ, স্পীড সেন্সর স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের ব্যবস্থা উন্নতিকরণ, অ্যাম্বুলেন্সের সুবিধা বাড়ানো, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সকল সড়ক মেরামত করা, ফুটপাত ও ট্রাফিক পুলিশ নিযুক্ত করা।আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্য তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এ কারণে তারা সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিয়েছেন। তবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে আবার সড়ক অবরোধ করবেন। দুপুর ১২টার মধ্যে দাবী বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখলে কঠোর আন্দোলন শুরু হবে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঁঞা বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমাদের ফোর্স ইতোমধ্যে দোষীদের গ্রেফতারের জন্য কাজ করছে। অতিদ্রুতই আমরা তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসব। সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমটিআই