একটি অ্যাম্বুলেন্স, নাপা ওষুধ আর চিকিৎসক ছাড়া চলে মেডিকেল কেন্দ্র

একটি অ্যাম্বুলেন্স, নাপা ওষুধ আর চিকিৎসক ছাড়া চলে মেডিকেল কেন্দ্র

বুধবার বিকেলে ফুটবল খেলে ফেরার সময় আবাসিক হলের সামনে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মোস্তফা তারেক সিয়াম। কাগজে কলমে ক্যাম্পাসে মেডিকেল কেন্দ্র থাকলেও সেখানে জীবনের অন্তিম সময়ে কোনো চিকিৎসা পাননি সিয়াম। আর এই ঘটনায় ফুঁসে উঠেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। তারা বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব অবহেলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। যাদের গাফিলতিতে বিনা চিকিৎসায় সিয়ামের মৃত্যু হয়েছে তাদের বিচার দাবি করেছেন তারা। এছাড়া মেডিকেল কেন্দ্রের সেবা ও পরিবহন পুলের সেবার মান ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার বিকেলে ফুটবল খেলে ফেরার সময় আবাসিক হলের সামনে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মোস্তফা তারেক সিয়াম। কাগজে কলমে ক্যাম্পাসে মেডিকেল কেন্দ্র থাকলেও সেখানে জীবনের অন্তিম সময়ে কোনো চিকিৎসা পাননি সিয়াম। আর এই ঘটনায় ফুঁসে উঠেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। তারা বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব অবহেলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। যাদের গাফিলতিতে বিনা চিকিৎসায় সিয়ামের মৃত্যু হয়েছে তাদের বিচার দাবি করেছেন তারা। এছাড়া মেডিকেল কেন্দ্রের সেবা ও পরিবহন পুলের সেবার মান ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সিয়াম গতকাল সন্ধ্যার দিকে যখন অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখায় ফোন দেন অন্য শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কোনো অ্যাম্বুলেন্স তারা পাননি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল কেন্দ্রে চিকিৎসক ও সেবা না পাওয়ায় তাকে রিকশায় করে জেলা শহরে আনতে হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি মাইক্রোবাস ব্যবস্থা করে দিলেও হাসপাতালে পৌঁছার আগেই সহপাঠীদের কোলে লুটিয়ে পড়েন সিয়াম।

বিক্ষোভরত এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, “একটা জীবনের মূল্য নাই। একটা অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় চলে। মেডিকেল কেন্দ্রে নাপা ছাড়া কোনো ওষুধ নাই। চিকিৎসকরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেননা। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জন্য এমন অপ্রতুল সেবা তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়। সিয়ামের মৃত্যুতে আমরা এসব অবহেলাকেই দায়ী করছি।”

সিয়ামের মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তার (প্রশাসনিক দায়িত্ব) পদ থেকে ড. মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম পদত্যাগ করেন  এবং পরিবহন পুলের জামাল হোসেনকে ফোরাম্যান থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবারের (৩১ অক্টোবর) সকল পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল সকাল ১০ টায় অডিটোরিয়ামে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করবেন বলে জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বনি ইয়ামিন ও আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন,  অবহেলাকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা মধ্যরাতে পর্যন্ত ফুঁসে ওঠে। যেহেতু উপাচার্য স্যার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তাই আমরা রাত ২ টার পর কর্মসূচি বন্ধ রেখেছি। শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস বিনির্মাণে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এএফএম আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা তার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং ফোরাম্যান জামালকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় উপাচার্য মহোদয় শিক্ষার্থীদের কথা শুনবেন। আমরা আশাকরি আলোচনার মাধ্যমে সঠিক পরিবেশ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর প্রাণ যাক এটা আমরা চাইনা। তারা আমদের সন্তানের মতো। আমি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলব। তারা আমার কাছে সব কথা সহজেই বলতে পারবে। যদি কোনো অবহেলা পাই তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুবিধা হয় এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাসিব আল আমিন/এমটিআই

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *