‘আমরা মূলত রাষ্ট্র সংস্কার চেয়েছিলাম। স্বৈরাচার সরকারের পতন চেয়েছিলাম। সরকারের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের সাধারণ মানুষ বিজয় লাভ করেছে। কিন্তু এই বিজয় উদযাপনের নামে কিছু মানুষ বিশৃঙ্খলা করছে। এদিকে ১১ দফা দাবিতে পুলিশ ভাইয়েরা কর্মবিরতি পালন করছে। এই পরিস্থিতিতে এলে সারাদিন বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে এবং সড়কেও এর বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে যেই কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা সড়কের শৃঙ্খলায় রাস্তায় নেমেছি। যানবাহন চালক ও পথচারীরা আমাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ ভাইয়েরা কর্মে ফিরে না আসছে ততদিন আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
‘আমরা মূলত রাষ্ট্র সংস্কার চেয়েছিলাম। স্বৈরাচার সরকারের পতন চেয়েছিলাম। সরকারের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের সাধারণ মানুষ বিজয় লাভ করেছে। কিন্তু এই বিজয় উদযাপনের নামে কিছু মানুষ বিশৃঙ্খলা করছে। এদিকে ১১ দফা দাবিতে পুলিশ ভাইয়েরা কর্মবিরতি পালন করছে। এই পরিস্থিতিতে এলে সারাদিন বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে এবং সড়কেও এর বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে যেই কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা সড়কের শৃঙ্খলায় রাস্তায় নেমেছি। যানবাহন চালক ও পথচারীরা আমাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ ভাইয়েরা কর্মে ফিরে না আসছে ততদিন আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
এভাবে কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শেখ আবু তাহের।
শুধু আবু তাহের নয়। গত দুই দিন যাবৎ তার মতো অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী হাতে বাঁশি, লাঠি আবার কেউ হাতের ইশারায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেছে। কোথাও আবার ঝাড়ু ও পলিথিন ব্যাগ হাতে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে বাগেরহাট শহরের বিভিন্ন স্থানে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। একই দৃশ্য বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকেও দেখা যায়।
শহরের দাশনী, বাসস্ট্যান্ড, ট্রাফিক মোড়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, সাধনার মোড়, এল জিডি মোড়, রাহাতের মোড়, মিঠাপুকুর পাড় এলাকায় বিভিন্নস্থানে সাধারণ শিক্ষার্থী ও আনসার সদস্যরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় যানবাহন চালকদের শৃঙ্খলার সঙ্গে চলাচলের অনুরোধ করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। সঠিক লেনে গাড়ি চালাতেও বলা হয় তাদের। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর্স (বিএনসিসি) ক্যাডেট, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চরমোনাই পীরের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদেরও দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগে খুশি পথচারী ও যানবাহন চালকরা।
বিএনসিসি ক্যাডেট সার্জেন্ট মিথুন সরদার বলেন, সড়কে যান চলাচল ঠিক করতে না এলে বুঝতে পারতাম না, একজন ট্রাফিক পুলিশ কতটা পরিশ্রম করে। তাদের প্রতি ভালোবাসা বেড়ে গেল।
হেমায়েত নামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, আমরা খুবই খুশি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় যানজট নিরসনের জন্য কাজ করছে। এতে আরও বেশি ভালো লাগছে। তারা নতুন উদ্যোগে, নতুন উদ্যমে দেশটি এগিয়ে যাক।
আদালত প্রাঙ্গণে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবির বলেন, কয়েকদিন ধরে পুলিশ কোনো দায়িত্ব পালন করছে না। যার ফলে বিশৃঙ্খলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য আমরা স্ব উদ্যোগে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছি। সাধারণ পথচারী ও যানবাহন চালকরাও নিয়ম মেনে পথ চলছেন।
সরকারি প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজের আরিফুল ইসলাম বলেন, সড়কে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় সে লক্ষ্যে আমরা দায়িত্ব পালন করছি।এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চরমোনাই পীরের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদেরও দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
সরকারি প্রফুল্ল কলেজের বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর্সের (সিইউও) সাকিব হাওলাদার বলেন, সেনাবাহিনীর প্রধান এবং বিএনসিসির (ডিজি) নির্দেশনা দিয়েছে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সড়কে যানবাহন চলাচল ঠিক রাখতে কাজ করতে। তাই বাগেরহাটের সরকারি প্রফুল্ল কলেজের দুইটি প্লাটুন এবং সরকারি মহিলা কলেজের একটি প্লাটুন ও বাগেরহাট সরকারি বয়েজ স্কুলের একটি প্লাটুন বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ ভাইয়েরা তাদের কর্মে না ফিরবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের কার্যক্রম অফ হতে থাকবে।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য বাকি বিল্লাহ বলেন, পুলিশের অনুপস্থিতিতে সারাদেশেই আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। আমাদের সদস্যরা স্বতস্ফূর্তভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদের নেতাকর্মীরা দায়িত্ব পালন করবে বলে জানান ছাত্র আন্দোলনের এই সদস্য।
শেখ আবু তালেব/আরকে