পণ্য সরবরাহ না করে টাকা হাতিয়ে নিতো রেলের কর্মকর্তা-ঠিকাদার চক্র

পণ্য সরবরাহ না করে টাকা হাতিয়ে নিতো রেলের কর্মকর্তা-ঠিকাদার চক্র

মালামাল সরবরাহ না করার পরও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করার অভিযোগে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এ মামলা করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রাক্কলন ব্যয়ের ৩১ শতাংশ কমে মালামাল সরবরাহের কথা বললেও তা মালামাল সরবরাহ না করে ওই টাকা তুলে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

মালামাল সরবরাহ না করার পরও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করার অভিযোগে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এ মামলা করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রাক্কলন ব্যয়ের ৩১ শতাংশ কমে মালামাল সরবরাহের কথা বললেও তা মালামাল সরবরাহ না করে ওই টাকা তুলে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর দপ্তরে দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশ বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। দুদকের মামলায় আসামিরা হলেন, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ফরিদ আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক মুহাম্মদ রাশেদুল আমিন ও প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী তাপস কুমার দাস, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির স্বত্বাধিকারী এম এ শুক্কুর। মুহাম্মদ রাশেদুল আমিন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষে (বেজা) উপ-সচিব হিসেবে কর্মরত।

মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, পিগ আয়রন (গ্রেড-৩) নামের এক ধরনের লোহা সরবরাহ না করে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা তুলে নেন ঠিকাদার। রেলওয়ের তিন কর্মকর্তার যোগসাজশে এভাবে মালামাল সরবরাহ না করে বিল তোলা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়, রেলওয়ের পক্ষ থেকে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ ১৪৬ দশমিক ৯২৭ টন পিগ আয়ন কেনার চাহিদা দেওয়া হয় প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে। তবে বাজেট স্বল্পতার কারণে ৮৫ মেট্রিক টন ক্রয় করার সিদ্ধান্ত হয়। 

প্রতি টনের দাম নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ৩৪ হাজার ১০০ টাকা। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, ফরম জমা ও মূল্যায়নসহ নানা আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষ করে ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট পিগ আয়রন কেনার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। 

সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রতি টন ১ লাখ ৬২ হাজার ২০০ টাকা দরে সরবরাহ করে, যা প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ৩১ শতাংশ কম। সাধারণ প্রাক্কলন ব্যয়ের সঙ্গে মালামাল ক্রয়ের পার্থক্য ১০ শতাংশ বেশি বা কম হয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি ৮৫ টনের জন্য দর দেয় ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। প্রাক্কলিত দর অনুযায়ী ৮৫ টন পিগ আয়রনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ কোটি ৯৮ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা। দাম যাতে দুই কোটি টাকার ওপরে না যায়, সে জন্য  ৮৫ টন কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কেননা দুই কোটি টাকার বেশি হলে তখন আর্থিক ক্ষমতা অনুযায়ী মন্ত্রীর কাছ থেকে দরপত্র অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। দুই কোটি টাকার কম হলে মহা-পরিচালক অনুমোদন দিতে পারেন।

দুদকের এজাহারে বলা হয়, টেন্ডার কমিটির সদস্যরা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে ৮৫ টন মালামাল সরবরাহ না করে সরকারের ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাতের অপরাধ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে। এ জন্য রেলের তিন কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

আরএমএন/এমএসএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *