‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দেওয়া হয়েছে’

‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দেওয়া হয়েছে’

‘আমি কোনো ছাত্রলীগের পোস্টেড কর্মী নই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদম শুরুতেই আমি ছাত্রলীগের গ্রুপ থেকে লিভ নেই। সত্যের পক্ষে থাকতে গিয়ে আমিই প্রতিবাদ করেছি সবার আগে। এখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। যাতে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নেওয়া যায়। অন্যদিকে আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে বলায় আমাকে রাজাকার বলা হয়েছে।’ 

‘আমি কোনো ছাত্রলীগের পোস্টেড কর্মী নই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদম শুরুতেই আমি ছাত্রলীগের গ্রুপ থেকে লিভ নেই। সত্যের পক্ষে থাকতে গিয়ে আমিই প্রতিবাদ করেছি সবার আগে। এখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। যাতে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নেওয়া যায়। অন্যদিকে আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে বলায় আমাকে রাজাকার বলা হয়েছে।’ 

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও দুই বছরের বহিষ্কারাদেশ পাওয়া ইমন মুৎসুদ্দি।

জানা যায়, আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ জাকির হোসেনসহ চার শিক্ষক পদত্যাগের দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনে অচল হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর মেডিকেল কলেজ। অধ্যক্ষ পদত্যাগ করলেও বাকিরা রয়েছেন বহাল তবিয়তে। 

গত ১২ সেপ্টেম্বর ‘৪ শিক্ষক অপসারণ দাবির নেপথ্যে ছাত্রলীগ নেতা!’ শিরোনামে অনলাইন পোর্টাল ঢাকা পোস্টসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইমন মুৎসুদ্দিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে সংবাদটি মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করেন তিনি।

ইমন মুৎসুদ্দি বলেন, আন্দোলনের শুরুতে আমি নোয়াখালীর সমন্বয়কদের সঙ্গে ছিলাম। তাদের সঙ্গে আমার একাধিকবার কথা হয়। তারপর কারফিউ দিলে আমাকে বাড়িতে (রাঙামাটি) যেতে হয়। তারপর আমি চট্টগ্রামে এসে আন্দোলন করি এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের টিমে কাজ করি। যার প্রমাণ আমার ফেসবুকসহ অনেকের কাছে আছে। 

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের অন্যায় অনিয়ম দেখে আমি তাদের বয়কট করি। ছাত্রলীগের কাউকে সেবা দেব না বলে ফেসবুকে পোস্ট দেই। তখন অনেক শিক্ষক ও ছাত্ররা আমার বিরুদ্ধে বলেছে। আমার ক্ষতি করবে বলে জানিয়েছে। এখন এতদিন পরে এসে আমাকে এসব বলে হয়রানি করা ছাড়া আর কিছু না। আমি আগেই ক্ল্যারিফাই করেছি, ছাত্রলীগকে বয়কট করেছি। আমি এখনই বলছি আমার দ্বারা পরিচালিত সকল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম থেকে লীগ বয়কট। 

দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় আমি ক্ষমা চেয়েছি উল্লেখ করে ইমন মুৎসুদ্দি বলেন, আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় আমি ক্ষমা চেয়েছি। তার একটা ভিডিও আমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে। 

আন্দোলনকারীরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইমন মুৎসুদ্দি  ভাই সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। আমরা তার প্রমাণ। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ভাই সবার আগে প্রতিবাদ করেছে। আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। উনি আগের কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। আমাদের আন্দোলনকে বানচাল করতে এমন ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা এসবে ভয় পাই না। যতদিন আমাদের দাবি আদায় না হবে ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে। এই স্বাধীন ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারের দোসরদের কোনো ঠাই নাই। 

এদিকে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাখ্যা চন্দ্র দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইমন মুৎসুদ্দি ছেলেটা ছাত্রলীগের লোক। তার নামসহ প্যাড আছে। সে খালেদা জিয়াকে কটূক্তি করে আবার মাফ চেয়েছে। আমি বিষয়গুলো দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

প্রসঙ্গত, গত ৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে স্বৈরাচার আখ্যা দিয়ে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাকির হোসাইন, উপাধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. রিয়াজ উদ্দিন ও সার্জারি বিভাগের শিক্ষক ডা. সৈয়দ কামরুল হোসাইনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে তারা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও অধ্যক্ষসহ চার শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। ফলে কার্যত অচল অবস্থা বিরাজ করছে মেডিকেল কলেজটিতে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অবশেষে অধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ জাকির হোসেনকে অপসারণ করে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ গাজীপুরে অধ্যাপক হিসেবে পদায়ন করা হয়। তবে উপাধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষক পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

হাসিব আল আমিন/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *