ক্রীড়াবিদদের সাফল্যের পেছনে কঠোর পরিশ্রম, মানসিক দৃঢ়তা এবং শারীরিক সামর্থ্য অপরিহার্য। কিন্তু এই সাফল্যের পথে একটি বড় বাধা হতে পারে ইনজুরির থাবা। ইনজুরি কেবল একজন ক্রীড়াবিদের কর্মক্ষমতা এবং ক্যারিয়ারকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না বরং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ইনজুরি মোকাবিলায় ক্রীড়া ফিজিওথেরাপি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ক্রীড়াবিদদের সাফল্যের পেছনে কঠোর পরিশ্রম, মানসিক দৃঢ়তা এবং শারীরিক সামর্থ্য অপরিহার্য। কিন্তু এই সাফল্যের পথে একটি বড় বাধা হতে পারে ইনজুরির থাবা। ইনজুরি কেবল একজন ক্রীড়াবিদের কর্মক্ষমতা এবং ক্যারিয়ারকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না বরং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ইনজুরি মোকাবিলায় ক্রীড়া ফিজিওথেরাপি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ক্রীড়াবিদদের মধ্যে সাধারণত যে ধরনের ইনজুরি দেখা যায় তা বিভিন্ন রকমের হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো-
ক্রীড়া ফিজিওথেরাপি ক্রীড়াবিদদের ইনজুরি থেকে পুনরুদ্ধার, তাদের কর্মক্ষমতা পুনরায় অর্জন এবং পুনরায় খেলায় ফিরিয়ে নিতে সহায়তা করে। ক্রীড়া ফিজিওথেরাপিস্টরা বিভিন্ন আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন, যার মাধ্যমে ক্রীড়াবিদরা দ্রুত সেরে উঠতে পারেন। প্রতিটি ক্রীড়াবিদের ইনজুরি এবং শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করার মাধ্যমে ক্রীড়াবিদরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। ফিজিওথেরাপিস্টরা ক্রীড়াবিদদের জন্য বিভিন্ন ধরনের থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ প্রদান করেন, যা পেশী, লিগামেন্ট এবং জয়েন্টের শক্তি ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সহায়ক।
এ ছাড়া ম্যানুয়াল থেরাপি, যেমন সফট টিস্যু মবিলাইজেশন এবং ম্যানিপুলেশন, ক্রীড়াবিদদের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে এবং আঘাতপ্রাপ্ত স্থানের বেদনানাশক হিসেবে কাজ করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রোথেরাপি যেমন আলট্রাসাউন্ড, টেনস, এবং ইলেকট্রিক স্টিমুলেশন ব্যবহার করে পেশীর আঘাত বা জয়েন্টের ব্যথা কমানো হয়।
ক্রীড়াবিদদের ইনজুরির সাথে মানসিক পুনরুদ্ধারও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইনজুরির পর অনেক ক্রীড়াবিদ মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েন, যা তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। ফিজিওথেরাপিস্টরা ক্রীড়াবিদদের মানসিক দৃঢ়তা বাড়াতে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেন।
ফিজিওথেরাপিস্টরা ক্রীড়াবিদদের আঘাত প্রতিরোধে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে সহোযোগিতা করে থাকেন। বিশেষ করে লাইফস্টাইল পরিবর্তন ও প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট ব্যবহারের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের ভবিষ্যতে পুনরায় আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি কমায়।
বাংলাদেশে ক্রীড়া ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পেশাদার ক্রীড়াবিদরা এখন তাদের ফিজিওথেরাপিস্টদের সহায়তা নিয়ে ইনজুরির দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং কর্মক্ষমতা উন্নত করার জন্য কাজ করছেন। বিভিন্ন স্পোর্টস ক্লাব, একাডেমি এবং জাতীয় দলগুলিতে এখন ক্রীড়া ফিজিওথেরাপিস্টদের উপস্থিতি অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু সরকার এর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সেরকম কোনো পদক্ষেপ নেওয়া চোখে পড়েনি।
পরিশেষে বলতে চাই, ক্রীড়াবিদদের ইনজুরি তাদের কর্মজীবনের একটি বাস্তবতা, কিন্তু সঠিক চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের মাধ্যমে তারা দ্রুত মাঠে ফিরে আসতে পারেন। ক্রীড়া ফিজিওথেরাপি শুধু ইনজুরি থেকে পুনরুদ্ধার নয়, বরং ক্রীড়াবিদদের কর্মক্ষমতা উন্নত এবং ভবিষ্যতের আঘাত প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের উচিত ক্রীড়া ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব সম্পর্কে খেলোয়াড় এবং সরকারকে সচেতন হওয়া এবং এই পেশায় যুক্ত সকলকে তাদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য তাদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করা।
লেখক,ডা: তামজিদ হোসেন (পিটি)মাস্কুলোস্কেলেটাল এন্ড অর্থোপেডিক্স ইউনিটফিজিওথেরাপি বিভাগ,সিআরপি, ঢাকান্যাশনাল প্যারালিম্পিক কমিটি অব বাংলাদেশ।
এফআই