‘চেয়েছিলাম আমি, কিন্তু শহীদি মৃত্যু পেল আমার ছেলে’

‘চেয়েছিলাম আমি, কিন্তু শহীদি মৃত্যু পেল আমার ছেলে’

‘আমার ছেলে বেঁচে থাকলে এ বছরই ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যেতো। সে টিউশনি করে নিজের খরচ চালিয়ে অষ্টম সেমিস্টার পর্যন্ত পড়েছে। আর্থিক অনটনের কারণে তাকে ভালো কিছু দিতে পারিনি। আমি চেয়েছিলাম আমার যেন শহিদী মৃত্যু হয়। কিন্তু আমার আগেই আমার ছেলেই শহীদি মৃত্যু পেল।’

‘আমার ছেলে বেঁচে থাকলে এ বছরই ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যেতো। সে টিউশনি করে নিজের খরচ চালিয়ে অষ্টম সেমিস্টার পর্যন্ত পড়েছে। আর্থিক অনটনের কারণে তাকে ভালো কিছু দিতে পারিনি। আমি চেয়েছিলাম আমার যেন শহিদী মৃত্যু হয়। কিন্তু আমার আগেই আমার ছেলেই শহীদি মৃত্যু পেল।’

বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুরে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচিতে হওয়া স্মৃতিচারণমূলক সভায় কথাগুলো বলছিলেন ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আব্দুল্লাহ আল তাহিরের বাবা আব্দুর রহমান। 

ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পূর্তিতে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে রংপুরে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে এদিন বিকেলে শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বের হয়ে টাউন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে শহীদ মিনারের পাদদেশে স্মৃতিচারণমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুরের ছাত্র প্রতিনিধি মোতায়াক্কিল বিল্লাহ শাহ ফকিরের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন আন্দোলনে নিহতদের স্বজনরা।

সেখানে আন্দোলনে নিহত সবজি ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেনের মা ময়না বেগম বলেন, ‘কোলে পিঠে করে সাজ্জাদকে বড় করেছি। এখনও মেনে নিতে পারছি না যে সে আর পৃথিবীতে নেই। সাজ্জাদের বউ-সন্তান আছে। তারা তো এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাদের কে দেখবে, সাজ্জাদের ছোট্ট সন্তানটিরই বা ভবিষ্যৎ কী? সাজ্জাদই আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল।’

শহিদ পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিব্যক্তিতে উঠে আসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অর্জিত বিজয়ে রাষ্ট্র সংস্কারে প্রত্যাশার কথা। সভায় অংশ নেওয়া সবাই বৈষম্য, দুর্নীতি, সংঘাতমুক্ত সুন্দর-সমৃদ্ধ সম্প্রীতির আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগকে ধারণ করে দেশ এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।

এদিকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পূর্তিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ চত্বরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর এর আয়োজনে রংপুর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে শহীদদের স্মরণে গাছের চারা রোপণ করে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কলেজ অধ্যক্ষ ডা. সারোয়ার জাহান। পরে ৫০০ গাছের চারা বিতরণ করা হয়।

এ সময় মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মাহফুজার রহমান, রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দীন, মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *