৭ মাসের এমপি কুমিল্লার ৬ আ.লীগ নেতা আত্মগোপনে

৭ মাসের এমপি কুমিল্লার ৬ আ.লীগ নেতা আত্মগোপনে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে শপথগ্রহণের পর মাত্র ৬ মাস ২৭ দিনের জন্য সংসদ সদস্য ছিলেন কুমিল্লার ৬ আওয়ামী লীগ নেতা। নতুন মুখ হিসেবে প্রথমবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথমবারেই বাজিমাত করেছিলেন তারা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ৬ আগস্ট ওই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন এই আওয়ামী লীগ নেতারা। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে শপথগ্রহণের পর মাত্র ৬ মাস ২৭ দিনের জন্য সংসদ সদস্য ছিলেন কুমিল্লার ৬ আওয়ামী লীগ নেতা। নতুন মুখ হিসেবে প্রথমবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথমবারেই বাজিমাত করেছিলেন তারা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ৬ আগস্ট ওই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন এই আওয়ামী লীগ নেতারা। 

জানা গেছে, কুমিল্লার মোট ১১টি সংসদীয় আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬টি আসনেই নতুন প্রার্থীরা জয়ী হন। তারা সবাই আওয়ামী লীগের নেতা হলেও তাদের মধ্যে চারজনই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। ৬ নতুন মুখের মধ্যে দুজন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। পরে ১০ জানুয়ারি শপথগ্রহণ করেন সবাই। প্রায় ৭ মাস সংসদ সদস্য থাকা কুমিল্লার আওয়ামী লীগ নেতারা হলেন-

ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর

কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসন থেকে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে প্রথমবারের মতো সংসদে সদস্য হিসেবে গিয়েছিলেন সবুর।

অধ্যাপক আব্দুল মজিদ

কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মজিদ। তিনি নৌকা প্রতীকের সেলিমা আহমাদ মেরিকে পরাজিত করেছিলেন।

জাহাঙ্গীর আলম সরকার

কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার। টানা দুইবারের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তার ছেলে ড. আহসানুল আলম সরকার কিশোর মুরাদনগর উপজেলার দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন।

আবুল কালাম আজাদ

কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথমবার সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। তিনি দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদে যান।

আবু জাহের

কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসন থেকে জীবনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আবু জাহের। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। এছাড়াও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসেম খানকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন।

আবু জাফর মোহাম্মদ শফিউদ্দিন শামীম

কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন শিল্পপতি আবু জাফর মোহাম্মদ শফিউদ্দিন শামীম। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এসকিউ গ্রুপের চেয়ারম্যান। আগের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুলকে হটিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় টিকিট পেয়েছিলেন আবু জাফর মোহাম্মদ শফিউদ্দিন শামীম।

স্বল্প সময়ের জন্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া এসব আওয়ামী লীগ নেতাদের চরিত্র বুঝে ওঠার আগেই সংসদ বিলুপ্ত হয়েছে। ফলে তাদের কাজের বিচার করার সুযোগ পাননি সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণ।এসব সংসদ সদস্যের সবাই এখন এলাকা ছাড়া রয়েছেন। সরকার পতনের সাথে সাথেই অন্যান্য সংসদ সদস্যদের মতো গা ঢাকা দিয়েছেন নতুনরাও।

কুমিল্লার নতুন সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে কুমিল্লা -১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর ও কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে সম্প্রতি। এছাড়া বাকি চারজনের বিরুদ্ধে এখনো কোনো মামলার খবর পাওয়া যায়নি।

আরিফ আজগর/আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *