তাজনুর সিফাতের বাবা নূরুনবী যাত্রাবাড়ীতে ব্যাটেলিয়ান আনসারে কর্মরত ছিলেন। সিফাতের সাথে তার বাবার শেষ কথা হয়েছিল ৫ আগস্ট। সেদিন তিনি ছেলেকে ফোনে বলেছিলেন বাবা বাইরে থেকে আমাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে, এটাই মনে হয় তোমাদের সাথে আমার শেষ কথা।
সত্যিই এটাই ছিল সিফাতের সাথে তার বাবার শেষ কথা। সেই যে নূরনবীর সাথে তার পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়, তার আর কোনো খোঁজ পায়নি তার পরিবার।
নূরনবীর ছেলে সিফাত বলেন, ৭ আগস্ট আমরা জানতে পারি ঢাকা মেডিকেলে অজ্ঞাত অনেকগুলো লাশ আছে। আমরা অনেক লাশ দেখেছি কিন্তু আমার বাবাকে চিনতে পারিনি। পরে আমাদের থেকে ডিএনএ টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর আজ আমাদের জানানো হয় একটি মরদেহের সাথে আপনার বাবার ডিএনএ ম্যাচ করেছে। এখন ঢাকা মেডিকেল থেকে আমার বাবার মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী সুধারাম থানা এলাকায় যাচ্ছি। সেখানে জানাজা শেষে আমার বাবাকে দাফন করা হবে।
সিফাতের প্রশ্ন— আমার বাবা কী দোষ করেছিল যে তাকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো? আমার বাবা তো সামান্য একজন ব্যাটালিয়ন আনসার ছিলেন। আমরা দুই বোন এক ভাই। আমার বাবাকে তো প্রায় আড়াই মাস পরে পেলাম। কীভাবে আমাদের সংসার চলবে? আমরা কীভাবে চলব সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।
নূরনবীর স্ত্রী ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ৫ আগস্ট এর পর আমাদের সাথে আর যোগাযোগ হয়নি। সে বেঁচে আছে না মারা গেছে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে সেপ্টেম্বর মাসে ১৭ তারিখে ডিএনএ স্যাম্পল দেওয়া হয়। আজ আমাদের থানা থেকে খবর দেওয়া হয় আপনাদের সাথে একটি মরদেহের ডিএনএ মিলে গেছে।
যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই)মোশের্দ আলম বলেন, গত ৫ আগস্টে যাত্রাবাড়ী থানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেকেই পুড়ে মারা যায়। সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে রাখা হয়। অনেক পরিবার খোঁজাখুজি করলেও মরদেহ শনাক্ত করতে পারেনি। পরে আমরা ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠাই। এরপর ডিএনএ স্যাম্পলের রিপোর্ট আসে।
এসএএ/এনএফ