৪ বছরেও শেষ হয়নি শরীয়তপুর-পদ্মা সেতু সংযোগ সড়কের সংস্কারকাজ

৪ বছরেও শেষ হয়নি শরীয়তপুর-পদ্মা সেতু সংযোগ সড়কের সংস্কারকাজ

শরীয়তপুর থেকে পদ্মা সেতুর পশ্চিম নাওডোবা সংযোগ সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়েছে মাত্র অর্ধেক কাজ।

শরীয়তপুর থেকে পদ্মা সেতুর পশ্চিম নাওডোবা সংযোগ সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়েছে মাত্র অর্ধেক কাজ।

প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে খুড়ে রাখা সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানা-খন্দের। যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে সড়কটি এখন যেন মরণ ফাঁদ। তবে আগামী বর্ষা মৌসুম আসার আগেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ।

পদ্মা সেতু চালু হয়েছে দুই বছর আগে। দক্ষিণ অঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষ পদ্মা সেতুর সুবিধা ভোগ করতে পারলেও শরীয়তপুরবাসীর ভাগ্যে এখনো জোটেনি পদ্মা সেতুর পূর্ণ সুবিধা। পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে শরীয়তপুরের নাওডোবায় পৌঁছালেই শুরু হয় দুর্ভোগ। একদিকে সরু রাস্তা, অন্যদিকে প্রবল বৃষ্টিপাতে সৃষ্টি হওয়া খানা-খন্দে সড়কটি যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সংস্কারের জন্য সড়ক খুঁড়ে রাখায় ভোগান্তির মাত্রা আরও বেড়েছে। মাত্র ২৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে লাগে দীর্ঘ সময়, বেড়েছে জ্বালানি খরচ, নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রাংশ। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ও যাত্রীরা।

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পদ্মাসেতুর নাওডোবা প্রান্ত থেকে শরীয়তপুর জেলা শহর পর্যন্ত ২ লেনের ২৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের জন্য ২০২০ সালের মার্চ মাসে ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ৩টি প্যাকেজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজের ওয়ার্ক ওর্ডার দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজ হয়েছে মাত্র ৫৫ ভাগ। সর্বশেষ  ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সড়কে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তেমন লোকবল নেই। নামে মাত্র শ্রমিক আর যন্ত্রপাতি দিয়ে ২৮ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজ। সংস্কার কাজরে ধীরগতির কারণে পুরো সড়ক জুড়েই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সড়কটিতে চলাচলকারী যাত্রীরা। একটু বৃষ্টি হলেই ভোগান্তি বাড়ে কয়েকগুণ। চলাচলে যাত্রীদের পড়তে হয় ঝামেলায়। সৃষ্টি হয় যানজট, ঘটে দুর্ঘটনা। ২৮ কিলোমিটার সড়ক পথ পাড়ি দিতে কখনো কখনো লেগে যায় দেড় থেকে ২ ঘণ্টা।

রমিজ খালাসী নামে একজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্মা সেতুর সুফল দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলার মানুষ পেলেও শরীয়তপুরের মানুষ পুরোপুরি পায়নি। সড়কের নির্মাণকাজ শুরু করলেও কাজে কোনো অগ্রগতি নেই। সংস্কার কাজের কারণে ভাঙা ও খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙা ও খানা-খন্দ বৃষ্টির পানিতে মরণ ফাঁদ তৈরি করে রেখেছে। শহর থেকে নাওডোবা পর্যন্ত সড়কে চলাচল করলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যায়।

চান মিয়া মাদবর নামে একজন বলেন, খানাখন্দের কারণে সড়কে চলাচলের কোনো উপায় নেই । অসুস্থ মানুষ নিয়ে সড়কে চলাচল করলে মৃত্যু ঝুঁকি থাকে। সুস্থ মানুষ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দ্রুত সড়কটির সংস্কার কাজ সমাপ্ত করার দাবি জানাই।

আবুল হোসেন একজন বাস চালক। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গাড়ি চালাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। যাত্রী ও নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই গাড়ি চলে সড়কটিতে। প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গাড়ি। সরু সড়কের কারণে দুইটি গাড়ি পাশাপাশি চলতে পারে না। দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করার দাবি জানাই।

সড়কের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

শরীয়তপুরের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সড়ক নির্মাণ কাজে জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে মোট কাজের অগ্রগতি প্রায় ৫৫ ভাগের বেশি। যদিও ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময় নেওয়া। তবে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই সড়কটির কাজ শেষ হয়ে যাবে।

সাইফ রুদাদ/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *