৩ বছর ধরে নিখোঁজ, যেভাবে প্রেমিকের বাড়িতে খোঁজ মিলল ‘মৃত’ নারীর

৩ বছর ধরে নিখোঁজ, যেভাবে প্রেমিকের বাড়িতে খোঁজ মিলল ‘মৃত’ নারীর

টানা তিনবছর ধরে নিখোঁজ। সকলের ধারণা ছিল, ওই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ির পক্ষ থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। অবশেষে সম্প্রতি খোঁজ মিলল ওই নারীর।

টানা তিনবছর ধরে নিখোঁজ। সকলের ধারণা ছিল, ওই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ির পক্ষ থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। অবশেষে সম্প্রতি খোঁজ মিলল ওই নারীর।

বাড়ি থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে প্রেমিকের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের কল্যাণে তাকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন বছর ধরে মৃত বলে মনে করা উত্তরপ্রদেশের গোন্ডার ৩০ বছর বয়সী এক নারীকে গত রোববার গভীর রাতে লখনৌতে জীবিত পাওয়া গেছে। ওই নারীর নাম কবিতা এবং তিনি ২০২১ সালে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। এই তিন বছরে তার পরিবার তার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করেছে।

আবার তার স্বামী তার বাবার বাড়ির বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা দায়ের করেছে। কিন্তু, তিন বছরে কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। ধরেই নেওয়া হয়েছিল, তার মৃত্যু হয়েছে। তবে এতদিনে তার সন্ধান পেয়েছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, লখনৌতে খোঁজ পাওয়া গেছে ওই নারীর। গত তিন বছর ধরে সেখানে তিনি তার প্রেমিকের সঙ্গে বসবাস করছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর দুয়া বাজার এলাকার বিনয় কুমারকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। এরপর ২০২১ সালের ৫ মে হঠাৎ করেই শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

কবিতার বাপের বাড়ির লোকজন, তার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনে। তার স্বামী, দেবর এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে কোতোয়ালি নগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে কবিতার ভাই অখিলেশ-সহ তার বাপের বাড়ির ছয়জনের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছিলেন কবিতার স্বামী বিনয় কুমার। তিনি অভিযোগ করেন, বাপের বাড়ির লোকজনই কবিতাকে অপহরণ করেছে।

দুই মামলারই তদন্ত চলছিল। কিন্তু কবিতার কোনও খোঁজ মেলেনি। বিষয়টি হাইকোর্টে পর্যন্ত গড়ায়। হাইকোর্ট জানতে চায় পুলিশ কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে। এরপর, উত্তর প্রদেশ পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং কোতোয়ালি থানার পুলিশ যৌথভাবে এই মামলার তদন্ত শুরু করে। অবশেষে সম্প্রতি কবিতা ও তার প্রেমিক সত্য নারায়ণ গুপ্তর খোঁজ পায় তদন্তরকারীরা। লখনৌয়ের ডালিগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়িতে গত তিন বছর ধরে বাস করছিলেন তারা।

গোন্ডার পুলিশ সুপার (এসপি) বিনীত জয়সওয়াল বলেছেন, “গোন্ডার দুর্জনপুর বাজারে সত্য নারায়ণের একটি দোকান ছিল। কবিতা প্রায়শই সেই দোকানে যেতেন। ক্রমে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর, তারা দুজনে একসঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা কবিতার ফেসবুক প্রোফাইলে কিছু কার্যকলাপ লক্ষ্য করেছি, যেটি তিনি একটি মিথ্যা নামে ব্যবহার করছেন। নজরদারি ও অন্যান্য উপায় ব্যবহার করে পুলিশ লখনৌয়ের ডালিগঞ্জে তার অবস্থান শনাক্ত করে। কবিতা তার স্বামীর বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার বাবার বাড়ির প্রতিবেশী সত্যনারায়ণ গুপ্তের সাথে থাকতেন।”

জিজ্ঞাসাবাদের সময় কবিতা জানিয়েছেন, লখনৌয়ে আসার আগে এক বছর ধরে তিনি এবং সত্য নারায়ণ অযোধ্যায় থাকতেন। পুলিশ জানিয়েছে, কবিতার মেডিকেল পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাকে শিগগিরই আদালতে পেশ করা হবে। আদালতের নির্দেশ অনুসারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে তাকে খুঁজে বের করে গোন্ডায় আনার পর সাংবাদিকদের কবিতা বলেন, “আমি যেখানে ছিলাম সেখানেই থাকতে চাই। আমি আমার পরিবারের সাথে দেখা করতে চাই না; তারা আমাকে বিরক্ত করেছে।”

টিএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *