‘হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার’ মতো হাঁসের দল নিয়ে ঘোরেন মিন্টু

‘হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার’ মতো হাঁসের দল নিয়ে ঘোরেন মিন্টু

পৃথিবীর বিখ্যাত ‘হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার’ গল্পের মতো হাঁসের দল সঙ্গে নিয়ে ঘুরে সাতক্ষীরায় সারা ফেলেছেন ওসমান গনি মিন্টু। বাঁশির সুরে হাঁস দল সঙ্গে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে রীতিমতো নেট দুনিয়ায় ভাইরাল বনে গেছেন তিনি।

পৃথিবীর বিখ্যাত ‘হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার’ গল্পের মতো হাঁসের দল সঙ্গে নিয়ে ঘুরে সাতক্ষীরায় সারা ফেলেছেন ওসমান গনি মিন্টু। বাঁশির সুরে হাঁস দল সঙ্গে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে রীতিমতো নেট দুনিয়ায় ভাইরাল বনে গেছেন তিনি।

দুই বছর আগে একটি গরুর খামার করেছিলেন ওসমান গনি মিন্টু। সেটিতে বড় এক প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে যান। পরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শে নিজের বাড়িতে গড়ে তোলেন হাঁসের খামার। হাঁসগুলোর প্রাকৃতিক খাবারের জোগান দিতে মোবাইলে ফোনে মাধ্যমে সাউন্ড বক্সে বাশির সুর বাজিয়ে মাঠে-বিল-খানাখন্দে হেঁটে বেড়ান মিন্টু। আর সেই সুর শুনে তার পেছনে ঘুরে বেড়ায় হাঁসের দল।

সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী কলারোয়া উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে হাঁস লালন পালন করে এলাকায় ‘হাঁস মিন্টু’ হিসেবে পরিচিতিও পেয়েছেন তিনি। তার পেছনে ছুটে বেড়ানো হাঁসের দলের এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখতে যাচ্ছেন উৎসুক জনতাও। এমন দৃশ্য রীতিমতো অবাক করেছে স্থানীয়দেরও।

সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে মিন্টুর বাড়ি। তার বাবার নাম আরিফুল ইসলাম।

শুধু বাজারের কৃত্রিম খাদ্য মুক্ত হাঁস পালনই নয়, বরং হাঁসের সঙ্গে অনন্য মিতালী গড়ে তুলে এলাকায় তাগ লাগিয়েছে মিন্টু। এই হাঁস চাষ করেই স্ত্রী, দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন তিনি।

মিন্টু ঢাকা পোস্টকে জানান, বাড়িতে থাকা বেশ কয়েকটি গরু একজনের কাছে তুলে দিয়ে আর টাকা পাননি তিনি। এতে অসেক ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। ঠিক তখনই প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করে একটি প্রশিক্ষণ নিয়ে সরকারি খামার থেকে  কিছু হাঁস সংগ্রহ করেন। তাতেরই তার ভাগ্য খুলে যায়।

তিনি জানান, একদিন হঠাৎ মন খারাপ হলে মাঠে বসে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন তিনি। তখন দেখেন হাঁসগুলো উতাল হয়ে উঠে তার কাছে আসছে। এ বিষয়টি থেকেই তিনি ভেবেছিলেন হাঁসগুলোকে বাঁশির সুর শোনানোর অভ্যাস করাবেন।

মিন্টু বলেন, হাঁস পালন করে আমি সফল হয়েছি। আমি চাই বাংলাদেশের বেকার যুবকরা চাকরির পেছনে না ঘুরে হাঁস বা গাভী পালনের মতো বিভিন্ন কৃষি খাত নিয়ে কাজ করলে এগিয়ে যেতে পারবেন। এ জন্য কৃষি কর্মকর্তারা যেন বেকার যুবকদের সহযোগিতা করেন সে অনুরোধও জানান তিনি।

মিন্টুর প্রতিবেশী আরিফুল ইসলাম বলেন, মিন্টু ভাইয়ের হাঁস পালন পদ্ধতিটা খুব ভালো লাগে। তিনি বাঁশি বাজিয়ে আগে আগে হাঁটতে থাকেন আর তার পেছনে পেছনে হাঁসগুলো লাইন ধরে চলে।

বোয়ালিয়া গ্রামের মো. শরবত আলী বলেন, আমাদের গ্রামের মিন্টু ভাই হাঁসের ফার্ম তৈরি করেছেন। তার কাছে প্রায় ১১০০ থেকে ১২০০ হাঁস আছে। সকাল হলেই হাঁসগুলোকে খামার থেকে বের করে বিভিন্ন বিলে নিয়ে যান তিনি। বিকেল হলে বাঁশির সুরে চলা হাঁসগুলো দেখতে ভিড় করেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষ।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরা জেলার অন্যান্য উপজেলার বাসিন্দারাও মিন্টুর থেকে দীক্ষা নিয়ে হাঁস লালন-পালনের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করতে পারেন। নিজেদের সমস্যা সমাধান করে তারা আত্মনির্ভরশীল হবেন আশাকরি। হাঁস পালন অত্যন্ত যুগান্তকারী পদক্ষেপ এবং আমি মিন্টুর সাফল্য কামনা করি।

ইব্রাহিম খলিল/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *