হাসকিং মিলে ডাকাতি, পৌর যুবদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫

হাসকিং মিলে ডাকাতি, পৌর যুবদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ডাকাতি মামলায় পৌর যুবদলের নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ডাকাতি মামলায় পৌর যুবদলের নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে তাদের আদালতে তোলা হলে চারজনের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত তাদের রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে, বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে দেবীগঞ্জ পৌর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- দেবীগঞ্জ পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাজারপাড়া এলাকার বাসিন্দা আজিজুল বারী সোহেল (৩৯), উপজেলা শ্রমিক দলের নেতা ও মধ্যপাড়ার বাসিন্দা জাকির হোসেন (৩৮), একই এলাকার হৃদয় ইসলাম বেলী (২০), পৌরসভার বডিংপাড়া এলাকার ও সমির ফকির তালতলা এলাকার বাসিন্দা সাজু ইসলাম (২৫) ও সমির ফকির (৩৫)।

পুলিশ জানায়, গত ১৬ অক্টোবর রাতে ডাকাতির অভিযোগ তুলে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন মেসার্স সাহা হাসকিং মিলের স্বত্বাধিকারী নন্দন কুমার সাহা। আটকের পর ডাকাতির করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তারদের মধ্যে হৃদয় ইসলাম নিজের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর চারজনকে আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালতের বিচারক রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আগামী সোমবার (২৮ অক্টোবর) তাদের শুনানীর দিন ধার্য করা হয়েছে।

মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ অক্টোবর গভীর রাতে দেবীগঞ্জ পৌর শহরের শাহাপাড়া এলাকায় নন্দন কুমার সাহার হাসকিং মিলে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতির সময় চার থেকে পাঁচজন মুখোশধারী ব্যক্তি চাইনিজ কুড়ালসহ ডাকাতির উদ্দেশ্যে মিলে হামলা করেন। এ সময় মিলের নৈশপ্রহরী আমিনুর রহমান (৫৮) ও লাবু ইসলামের (৫৫) মাথা ও কানসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করা হলে তারা অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

পরে দুর্বৃত্তরা মিলের অফিসের দরজা, আলমিরা ও সিন্দুকের বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকালে নন্দন কুমারের ছোট ভাই সুব্রত কুমার সাহা মিলে গেলে নৈশপ্রহরীদের ডাকতে শুরু করলে মিলের পাশ থেকে আহত অবস্থায় লাবু উঠে আসেন। তার কিছুদূরে অপর নৈশ প্রহরী আমিনুর রহমান অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। কয়েকদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় নৈশপ্রহরী লাবু ইসলাম মারা যান। এ ঘটনায় ১৬ অক্টোবর দুপুরে দেবীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

তবে আমিনুরের দেয়া তথ্যানুযায়ী সেদিন রাতেই ডাকাতির অভিযোগে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় মামলা করেন নন্দন। মামলার পর তদন্তে নামে যৌথবাহিনী। তাদের অভিযানে বুধবার রাতে হৃদয় ইসলাম বেলীকে গ্রেপ্তার করার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার দেওয়া তথ্যে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, ডাকাতির মামলায় যৌথবাহিনীর অভিযানে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হৃদয় ইসলাম বেলি আদালতে নিজের দায় স্বীকার করেছেন। বাকি চারজনের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত তাদের রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ডাকাতির ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় যেহেতু আহত একজনের মৃত্যু হয়েছে, তাই বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ডাকাতিসহ হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।

এসকে দোয়েল/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *