আনন্দ মিছিলে ছাত্র জনতার উপর হামলা, মারধর ও গুলির হুকুম করায় নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের গ্রেপ্তার সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর (৬৮) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে এমপির স্ত্রী, ছেলে ও ভাইসহ আসামি করা হয়েছে মোট ১৩৮ জনকে।
আনন্দ মিছিলে ছাত্র জনতার উপর হামলা, মারধর ও গুলির হুকুম করায় নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের গ্রেপ্তার সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর (৬৮) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে এমপির স্ত্রী, ছেলে ও ভাইসহ আসামি করা হয়েছে মোট ১৩৮ জনকে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকালে মামলাটি হাতিয়া থানায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর আগে সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে হাতিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরকৈলাশ গ্রামের বাসিন্দা আবদুল করিম (৪৭) বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে মোহাম্মদ আলীর পরিবারের পাঁচজন ছাড়াও ১৮জনের নাম উল্লেখ ও ১২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এমপি পরিবারের অন্য আসামিরা হলেন, তার স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস (৬২), ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন (৫৯), ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান আশিক আলী অমি (৩২) ও মাহতাব আলী অদ্রি (২৬)। মামলার অন্য আসামিরা সবাই এমপি মোহাম্মদ আলীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে জানা গেছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেল ৪টায় স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি চরকৈলাশ গ্রামের ওছখালী-সাগরিয়া সড়কের এমপির পোল এলাকায় পৌঁছলে সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস, ভাই মাহবুব মোর্শেদ লিটন ও ছেলে আশিক আলী অমির নির্দেশে ও নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে বাদী আবদুল করিম, সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নাছির ও হাতিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমান গণিসহ অনেকে আহত হন। এছাড়া সন্ত্রাসীরা সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. রুবেল উদ্দিনের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। এতে এক লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিসান আহমেদ ঢাকা পোস্টকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, কারাগারে প্রেরণকৃত মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলী অমিকে ওই মামলায় দেখানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ আগস্ট রাত ৩টার দিকে উপজেলার ওছখালীর নিজ বাসভবন থেকে মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী সাবেক এমপি আয়েশা ফেরদাউস ও তাদের বড় ছেলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক আলী অমিকে হেফাজতে নেয় নৌবাহিনী। সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে তাদেরকে পুলিশ ও নৌবাহিনীর একটি বিশেষ দল হাতিয়া থেকে জেলা সদরে নিয়ে আসে। এরপর তাদের সেনাবাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তায় সুধারাম থানায় রাখা হয়।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে থানা-পুলিশ তাদের ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে নথিপত্র হাতিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপন করলে শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় তারা কারাগারে প্রবেশ করেন।
প্রতিনিধি/এসএমডব্লিউ