সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের একমাত্র ভরসা একটি বেসরকারি সংস্থা প্রদত্ত পানির প্ল্যান্ট। গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানির প্ল্যান্ট নষ্ট হওয়াতে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে খাওয়া ও দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজনীয় পানির সংকটে চরম বিপাকে পড়েছে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের একমাত্র ভরসা একটি বেসরকারি সংস্থা প্রদত্ত পানির প্ল্যান্ট। গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানির প্ল্যান্ট নষ্ট হওয়াতে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে খাওয়া ও দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজনীয় পানির সংকটে চরম বিপাকে পড়েছে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালের চারটি মোটর চুরি ও একটি বেসরকারি সংস্থা প্রদত্ত পানির প্ল্যান্ট নষ্ট হওয়াতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে দ্রুত এই সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, যে পানির প্ল্যান্ট বসানো আছে সেটাও নষ্ট। আশপাশের দোকান থেকে কিনে, অনেক দূর হেঁটে ফিল্টার থেকে ও বাসাবাড়ি থেকে বোতলে বা বালতিতে করে পানি নিয়ে আসছেন রোগীর স্বজনরা। তাদের দাবি, পানি না থাকায় রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক রোগী বলেন, স্যালাইন গুলিয়ে খাওয়ার মতো পানিও নেই হাসপাতালে। প্রতিটি কাজের জন্য বাইরে থেকে পানি আনতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের বিশুদ্ধ খাবার পানির চাহিদা মেটাতে এনজিওর দেওয়া পানির প্ল্যান্টই ছিল ভরসা। তবে সেটি তিন সপ্তাহ ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। রোগীরা প্রতিদিন পানি আনার কষ্টের কথা বলাবলি করেন। কিন্তু কেউ সে কথা গায়ে মাখেন না।
উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের গুমানতলী এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সকিনা খাতুন জানান, হাসপাতালে খাবার পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই দোকান থেকে পানি কিনে খেতে হচ্ছে।
নিউমোনিয়া আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকা থেকে এসেছেন মর্জিনা খাতুন। তিনি বলেন, মেয়েকে নিয়ে দুই দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। রাতে খাবার পানির দরকার ছিল। কিন্তু হাসপাতালের ভেতরে খাবার পানির ব্যবস্থা না থাকায় পানি সংগ্রহ করতে পারিনি। পরে পাশে একজনের কাছ থেকে পানি চেয়ে খেয়েছি।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের চারটি মোটর অনেক আগে চুরি হলেও তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যথা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরের পানির প্ল্যান্টটি নষ্ট হওয়ায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে এক সপ্তাহ আগে। তিনি আমাকে বলেছেন আমি ভিজিট করে দেখে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু এখনো করেননি। হয়তো দুই-একদিনের মধ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এটা দেখা হবে। এছাড়াও হাসপাতালের মোটরগুলো চুরি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জেনেছেন বলে জানান তিনি।
শ্যামনগর সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ লিয়াকত আলী বাবু বলেন, হাসপাতালে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। রোগীর স্বজনরা দূর-দূরান্ত থেকে পানি এনে পান করছেন। এতে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে দ্রুত পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
ইব্রাহিম খলিল/আরএআর