স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দক্ষতা উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি স্বতন্ত্র ‘মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি পরিদপ্তর’ গঠন করাসহ ৬ দফা দাবি জানিয়ে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মাসিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।
স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দক্ষতা উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি স্বতন্ত্র ‘মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি পরিদপ্তর’ গঠন করাসহ ৬ দফা দাবি জানিয়ে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মাসিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজি অ্যান্ড ফার্মেসি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সংসদের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চিকিৎসা সংক্রান্ত ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ফার্মেসি, মেডিকেল টেকনোলজি কোর্সগুলো নিয়োগ, গ্রেড, উচ্চশিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ডিপ্লোমা কোর্সের সাথে ব্যাপক বৈষম্যের শিকার। অথচ স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে ডাক্তার-নার্সদের পাশাপাশি ফার্মাসিস্ট, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এতে বলা হয়, চিকিৎসকরা রোগ নির্ণয় করার জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে নির্দেশ করবে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে তা চিকিৎসককে পাঠায় এবং এটি অনুযায়ী চিকিৎসক ওষুধ লেখেন। এই ওষুধ সঠিকভাবে বণ্টন, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স, ওষুধের অপব্যবহার ঠেকানোর কাজটি করেন ডিপ্লোমাধারী ফার্মাসিস্টরা। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য এই জনগুরুত্বপূর্ণ ২টি পেশার নিয়োগ নিয়মিত দেওয়া হয় না বিধায় সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাজারো মানুষ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালের স্ট্যান্ডার্ড সেটআপে পূর্বের ন্যায় আবারো ফার্মাসিস্ট, মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে চরমভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। সেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী ডাক্তার-নার্স নিয়োগের প্রস্তাবনা করা হলেও একজন ডাক্তার নিয়োগ দিলে ৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দিতে হয় এই গাইডলাইনটি মন্ত্রণালয় মনে হয় ভুলে গেছে। ফার্মাসিস্টদের বেলায়ও ঠিক এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।
আরও বলা হয়, ওষুধের মূল্য ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর চাপ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে সরকার হাসপাতাল ফার্মেসির পাশাপাশি এনসিডি কর্নার, আই কর্নারসহ বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম চালু করছে যেখানে ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি আইএইচটি থেকে হাজার হাজার ডিপ্লোমাধারী ফার্মাসিস্টরা বেকার হয়ে বসে আছে, কিন্তু এত সংকটের পরও ফার্মাসিস্ট পদ না বাড়িয়ে পুরোনো সেট-আপে রাখা হচ্ছে, যা পেশার ওপর চরম জুলুম। সে কারণে প্রতি ১০ শয্যার বিপরীতে ১ জন ফার্মাসিস্ট নিয়োগ নীতি বাস্তবায়ন করা অপরিহার্য।
৬ দফা দাবি-
১. মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দক্ষতা উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি স্বতন্ত্র ‘মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি পরিদপ্তর’ গঠন করতে হবে।
২. দেশের ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিকে (আইএইচটি) মেডিকেল টেকনোলজি কলেজে রূপান্তর করে, ঢাকার আইএইচটিকে কেন্দ্র করে একটি স্বতন্ত্র মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দক্ষ বিষয়ভিত্তিক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের প্রভাষক হতে অধ্যাপক পর্যন্ত বিভিন্ন পদে পদায়ন করতে হবে।
৩. মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড (দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদাসহ) বাস্তবায়ন করে ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করে দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে।
৪. গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের জন্য নবম গ্রেডের পদ সৃষ্টি করে স্ট্যান্ডার্ড সেট আপ ও নিয়োগবিধিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৫. মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল গঠন করে, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের জন্য প্রাইভেট সার্ভিস নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
৬. বিএসসি ও এমএসসি কোর্সে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ভাতা এবং স্কলারশিপ প্রদানসহ সব অনুষদের বিএসসি কোর্স চালু করে শিক্ষা ব্যবস্থায় উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
টিআই/পিএইচ