ফরিদপুরের সালথা থানার সাবেক ওসি শেখ সাদিক ও এসআই তন্ময় চক্রবর্তীসহ থানার আট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে সালথার ভাওয়াল গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল হাকিম মিয়ার ছেলে মো. হাফিজুর রহমান মুন্নু (৬৫) বাদী হয়ে ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন।
ফরিদপুরের সালথা থানার সাবেক ওসি শেখ সাদিক ও এসআই তন্ময় চক্রবর্তীসহ থানার আট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে সালথার ভাওয়াল গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল হাকিম মিয়ার ছেলে মো. হাফিজুর রহমান মুন্নু (৬৫) বাদী হয়ে ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন।
আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মারুফ হাসান মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহার নামীয় দুই আসামির একজন হলেন সালথা থানার সাবেক ওসি শেখ সাদিক (৪৫)। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার বারাদি গ্রামের বাসিন্দা। ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি সালথা থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এজাহারভুক্ত অপর আসামির নাম তন্ময় চক্রবর্তী (৩৫) । তিনি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ভররামদিয়া গ্রামের তাপস চক্রবর্তীর ছেলে। তিনি বর্তমানে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এ মামলার এজাহারে অপর ছয় আসামিকে অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বাদী হাফিজুর রহমান গ্রামীণ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাক (ডিজিএম)। তার ভাই মৃত আতিয়ার রহমান সালথা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, চাকরি থেকে অবসরে যেয়ে তিনি (হাফিজুর রহমাম) গ্রামে ফিরে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাকে ওসি শেখ সাদিক ও এসআই তন্ময় বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে বলতো যে- আপনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অনেক টাকা উপার্জন করে গ্রামে এসে রাজনীতি করছেন। এখন আমাদের ২০ লাখ টাকা চাঁদা দেবেন নইলে শান্তিতে থাকতে পারবেন না। তিনি চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ২০২৩ সালের ১১ মার্চ রাতে তাকে আটক করে আসামিরা তার নিকট ২০ লাখ চাঁদা দাবি করেন নইলে থানায় নিয়ে নির্যাতন ও হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন। তিনি প্রাণভয়ে নানাভাবে তাৎক্ষণিক ৫ লাখ টাকা দেন। এরপরেও তারা তাকে থানায় নিয়ে যেয়ে রাতভর অমানবিকভাবে নির্যাতন করে পরদিন একটি বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান।
মামলার বাদী হাফিজুর রহমান বলেন, আমাকে মিথ্যা মামলায় আদালতে চালান দেওয়ার পরে এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেন ওই ওসি ও এসআই। এরপর দীর্ঘদিন কারাভোগের পর ওই মামলায় আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসি। সেসময় ভয়ে ভীত হওয়ায় আদালতে মামলা করতে পারি নাই। এখন দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসায় এবং অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় মামলা করেছি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মামুন অর রশীদ বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা এ মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
সালথা থানার সাবেক ওসি শেখ সাদিক বর্তমানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত রয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ সাদিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। আমি চাকরিজীবনে সততার সাথে কাজ করছি। চাঁদাবাজি জীবনেও করিনি।
জহির হোসেন/আরএআর