সন্ত্রাসী-দুর্নীতিবাজদের রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে

সন্ত্রাসী-দুর্নীতিবাজদের রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে

দ্রুত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনসহ চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এর সঙ্গে ৯ দফা প্রস্তাব ও দুই দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।

দ্রুত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনসহ চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এর সঙ্গে ৯ দফা প্রস্তাব ও দুই দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।

বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে পুরানা পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি উত্থাপন করেন দলটির আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।

তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় এমন সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে অনূর্ধ্ব ১৫ সদস্যবিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। যার মেয়াদ ছয় মাসের বেশি হতে পারবে না। 

তিনি আরও বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের কেউ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যার বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে গত ১৬ বছরে সংগঠিত সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। তদন্তসাপেক্ষে নিহত-আহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদেরকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।

চরমোনাই পীর বলেন, স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে। এখন সময় দেশ গড়ার। এখন সময় সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচারভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণের। 

তিনি বলেন, গত ১৯ জুলাই আমরা পরিষ্কার দাবি জানিয়েছি যে, সরকারের পদত্যাগই একমাত্র সমাধান। শুরু থেকেই নানা মাত্রায় ও নানাভাবে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। আমাদেরও অনেক ভাই জীবন দিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন।

এ সময় কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির। তিনি বলেন, প্রস্তাবগুলো হচ্ছে— তদন্তসাপেক্ষে দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। গত ১৬ বছর যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যেসব কর্মচারী আইন, সংবিধান ও শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনা ও অনুভূতির বিরুদ্ধে যায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে।

দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ ও উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। উলামায়ে কেরাম জাতির ধর্মীয় নেতৃত্ব প্রদান করেন। তারা উম্মাহর ঈমান-আমল রক্ষায় কাজ করেন। সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উলামায়ে কেরামদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি অবশ্যই থাকতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ছাত্রজনতার এই আন্দোলন হত্যা, দুর্নীতি ও অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগের বিরুদ্ধে ছিল। শিল্প ও কলকারখানা ধ্বংসের বিরুদ্ধে ছিল। এখন যদি আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে কেউ যদি একই রকম কাজ করেন তাহলে তা স্ববিরোধিতা হয়ে যায়। যারা লুটতরাজ, দখলদারি ও অরাজকতায় লিপ্ত তারা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ না বরং তারা সুযোগসন্ধানী। যারা দেশের সম্পদ নষ্ট করছে তাদের প্রতিরোধে এলাকায়-এলাকায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করুন।

৯ দফা দাবি আদায়ে কর্মসূচি ঘোষণা

আগামী শুক্রবার বিকেল ৩টায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে বিশাল গণ জমায়েত করবে দলটি। পর্যায়ক্রমে বিভাগ ও জেলা শহরে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

জেইউ/এমজে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *