শেখ মুজিব ১৫ বছর সময় পেলে হাসিনাকেও ছাড়িয়ে যেতেন : মাহমুদুর রহমান

শেখ মুজিব ১৫ বছর সময় পেলে হাসিনাকেও ছাড়িয়ে যেতেন : মাহমুদুর রহমান

স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ মুজিবই প্রথম স্বৈরতন্ত্রের আদর্শ জমিন তৈরি করে ফ্যাসিবাদের বীজ বুনেছিলেন। তিনি যদি ১৫ বছর দেশ শাসন করতেন তাহলে শেখ হাসিনাকেও ছাড়িয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ মুজিবই প্রথম স্বৈরতন্ত্রের আদর্শ জমিন তৈরি করে ফ্যাসিবাদের বীজ বুনেছিলেন। তিনি যদি ১৫ বছর দেশ শাসন করতেন তাহলে শেখ হাসিনাকেও ছাড়িয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদী বয়ান নির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা : একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সভাপতি শেখ মো. আরমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বক্তব্য দেন।

মাহমুদুর রহমান বলেন, শেখ মুজিব দেশের ফেরার পর প্রথম যে ব্যবস্থাগুলোকে ধ্বংস করেছেন তার মধ্যে অন্যতম গণতন্ত্র। বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছিলেন তিনি। শেখ মুজিব সাড়ে তিন বছরের শাসনে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছেন, দুর্ভিক্ষে মানুষ মেরেছেন, রক্ষীবাহিনীর মাধ্যমে হাজার হাজার বিচার বহির্ভূত হত্যা করেছেন। দেশের সব মিডিয়া, বিরোধী মতের কণ্ঠকে রোধ করেছে। শেখ মুজিব বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের রাস্তা দেখিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনা তার বাবার পথেই গত ১৫ বছরে হেঁটেছেন।

ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়– কার্লট চরিত্র তৈরি, পাবলিক এনিমি তৈরি, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা, ফ্যাসিবাদ বয়ান প্রচারে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ। এ বিষয়গুলোর মধ্যে সাবেক সরকার দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল। বিরোধী মত দমন করার জন্য তারা এই বিষয়গুলোকে গত ১৫ বছরে কাজে লাগিয়েছে।

ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় মিডিয়ার মদদ ছিল উল্লেখ করে আমার দেশ সম্পাদক বলেন, মিডিয়া এই ফ্যাসিবাদ নির্মাণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। গত ১৫ বছর মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে অসংখ্য মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছে। জঙ্গি কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে ইসলামোফোবিয়া ছড়ানোর জন্য। সেটি প্রচারে বেশ কিছু পত্র-পত্রিকা অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছে। এখনও আমরা দেখছি সেই মিডিয়াগুলো ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে কাজ করে যাচ্ছে। তারা বলছে শেখ হাসিনা খারাপ কিন্তু শেখ মুজিব ভালো। কিন্তু শেখ মুজিবের প্রত্যাবর্তনের পরের চিত্র শেখ হাসিনার থেকে ভয়ংকর ফ্যাসিস্টের চিত্র। মিডিয়ার উচিত ১৫ বছরে যা হয়েছে সেটা নিয়ে রিভিজিট করা। সেইসঙ্গে আর্থিক খাতগুলোতে কীভাবে আওয়ামী সরকার প্রকল্পের নামে দুর্নীতি করেছে তার পর্দা ফাঁস করা।

শফিকুল আলম বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং গণমাধ্যম কীভাবে তার বৈধতা দিয়েছে, তা ইতিহাসে খুব অদ্বিতীয় ঘটনা। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশ এবং বিশ্বের গবেষকরা একটি নির্মোহ গবেষণা করতে পারেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন পত্রিকায় শিরোনামের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকে ন্যায্যতা দেওয়া হয়েছে। বিচার বহির্ভূত হত্যাকে ন্যায্যতা দেওয়া হয়েছে। ২০১৩ সালের ৬ মে হেফাজতের ওপর ক্র্যাকডাউনের পর একটি পত্রিকার লেখক প্রথম পাতায় হেফাজতকে ‘এনসিয়েন্ট এনিমেল’ এর সঙ্গে তুলনা করেছে। কীভাবে গণতন্ত্র না থাকাই ভালো, তা দেখানো হয়েছে। গত ৫ আগস্টের আগেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে পাকিস্তানি আমলের কায়দায় ছাত্রদের সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্ত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অনেকে গণমাধ্যমে গিয়ে অনবরত এমন মতামত দিয়েছেন। তাই গণমাধ্যমকে সঠিক পথে আনতে সব মতের মানুষকে জায়গা দিতে হবে।

এসময় গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমকে নিজেদের ভূমিকা নিয়ে একটি নিজস্ব অনুসন্ধান করার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।

কেএইচ/এসএসএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *