শিক্ষার্থী আটক-হয়রানি বন্ধের আহ্বান সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের

শিক্ষার্থী আটক-হয়রানি বন্ধের আহ্বান সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের

কোটা সংস্কার আন্দোলনে হতাহত ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আটক ও হয়রানি বন্ধের আহ্বানও জানান তারা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে হতাহত ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আটক ও হয়রানি বন্ধের আহ্বানও জানান তারা।

শনিবার (৩ আগস্ট) সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অন্তরালে অপশক্তির ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া।

এতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, ডুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম, প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির, কৃষিবিদ ড. আজাদুল হক।

তারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদাকে প্রায় তলানিতে নিয়ে গেছে। কয়েকদিনের সংঘাত-সহিসংতায় অনেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে তার চেয়েও অধিক। সম্পদের ক্ষতি হয়েছে কমপক্ষে দেড় লাখ কোটি টাকার। দেশের অভ্যন্তরে শান্তি, শৃঙ্খলা নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করেছে। এ বিষয়ে বহির্বিশ্বের কাছে ভিন্ন বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে। যেমন দেশে মানবাধিকার, মতপ্রকাশ ও নিরাপদ বসবাসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে দেশের ভাবমর্যাদা অব্যাহতভাবে ক্ষুণ্ন ও ব্যাহত হচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশের উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়া প্রতিনিয়ত প্রকাশ পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ ও যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বাংলাদেশের ইমেজ সংকটের কথা উল্লেখ করেছে। আমাদের অর্থনীতির প্রধান দুটি স্তম্ভের একটি রপ্তানি আয়। যা মূলত গার্মেন্টস পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। দ্বিতীয় স্তম্ভ রেমিট্যান্স। যা দেশের প্রবাসী কর্মীরা পাঠিয়ে থাকে। এই দুটিতেই আয় প্রবৃদ্ধি কমছে।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে উল্লেখ করে তারা আরও বলেন, সেতু ভবন, বিআরটিএ ভবন, কাজী পাড়া মেট্রোরেল স্টেশন, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ও মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ডেটা সেন্টার, রামপুরা বিটিভি সেন্টার, নরসিংদী কারাগারে হামলাসহ বিভিন্ন সরকারি অফিস ভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে জনগণের তথা রাষ্ট্রের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে ছাত্র আন্দোলনের অন্তরালে দুষ্কৃতিকারীরা। বাংলাদেশের এই অচল অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না। দেশের অনেক সাধারণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। আমরা মনে করি ছাত্রদের সমন্বয়কারীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের যৌক্তিক সব দাবিগুলোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই দায়িত্ব নেবেন। দ্রুত সব হত্যাকাণ্ডের বিশ্বাসযোগ্য তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের আটক ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

একইসঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্তরালে দুষ্কৃতকারী ও যেসব পুলিশের গুলিতে সাধারণ ছাত্র নিহত হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে জাতির সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক আবেদ আলী বলেন, পুলিশের গুলি ছাড়াও অন্য কাদের বন্দুকের গুলি সাধারণ ছাত্রদের পিতামাতার বুক খালি করেছে এবং দেশে-বিদেশে কারা এর মাস্টারমাইন্ড সেটি জাতি জানতে চায়। যাদের হারিয়েছে কেবল তারাই জানে শোকের মর্ম।

তিনি বলেন, অন্যের কাছে লাশের সংখ্যা কেবল উদ্দেশ্য পূরণের হাতিয়ার। এই রক্তপাত ও নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ বাংলাদেশের মানচিত্রের ওপর স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আরএইচটি/এসএসএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *