আর্থিক সংকটের কারণে অবসরে যাওয়ার পর বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ সুবিধার টাকা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। সারাজীবনের জমানোর টাকা চাকরি শেষ সময় পেতে নানা হয়রানির শিকার হন তারা। এ সংকট দূর করতে আর্থিক সংকুলান না করে তা শিক্ষার্থীদের কাঁধে চাপানো হয়েছে। এতে সংক্ষুদ্ধ ও নাখোশ হয়েছেন অভিভাবকরা।
আর্থিক সংকটের কারণে অবসরে যাওয়ার পর বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ সুবিধার টাকা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। সারাজীবনের জমানোর টাকা চাকরি শেষ সময় পেতে নানা হয়রানির শিকার হন তারা। এ সংকট দূর করতে আর্থিক সংকুলান না করে তা শিক্ষার্থীদের কাঁধে চাপানো হয়েছে। এতে সংক্ষুদ্ধ ও নাখোশ হয়েছেন অভিভাবকরা।
জানা গেছে, সম্প্রতি বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ভর্তি ফির সঙ্গে ১০০ টাকা করে নেওয়া হলেও এবার নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন ফির সঙ্গেও এ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায় শুরু হয়েছে। চলতি বছর প্রথমবারের মতো বেসরকারি স্কুলের নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনে অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে ১০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে, যা নিয়ে ‘নাখোশ’ অভিভাবকরা।
তারা বলছেন, শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি কোষাগার থেকে বেতন পান। ফলে অবসর সুবিধা দেওয়াটাও সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু সেটা ‘চাপানো হচ্ছে’ শিক্ষার্থীদের কাঁধে।
শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি ফির সঙ্গে ১০০ টাকা করে আদায়ের চল শুরু হয় ২০২৩ সালে। এরপর চলতি বছর থেকে বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিকেও ভর্তিতে এ খাতে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়। আগামী বছরেও তা দিতে হবে। তবে রেজিস্ট্রেশনের সঙ্গে এই খাতের জন্য অর্থ কেটে রাখা এবারই প্রথম।
এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় রেজিস্ট্রেশনে বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ১০০ টাকা ফি আদায় শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে এর বেশি কিছু মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
গত কয়েক বছরের তুলনায় ১২৫ টাকা বাড়িয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন ফি ২৯৬ টাকা নির্ধারণ করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড। শুক্রবার থেকে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে ফরম পূরণ ও টাকা জমা দেওয়া যাবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে প্রথমে নির্ধারিত তারিখের পরে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগের কথা বলা না হলেও গত ১৭ অক্টোবর সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে ১৪০ টাকা বিলম্ব ফি দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেওয়া হয়। এবার রেজিস্ট্রেশন ফি ২৯৬ টাকা নির্ধারণ হলেও গতবছর এই ফি ছিল ১৭১ টাকা। সে হিসেবে গত বছরের থেকে এবার ১২৫ টাকা ফি বেড়েছে।
আগে স্কাউটস ফি ১৫ টাকা থাকলেও চলতি বছর তা বাড়িয়ে ২৫ টাকা করা হয়েছে এবং আরও ১৫ টাকা ‘গার্লস গাইড ফি’ হিসেবে নতুন যুক্ত হয়েছে মোট ফির সঙ্গে। এর সঙ্গে ৮০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি, ৫০ টাকা ক্রীড়া ফি, পাঁচ টাকা বিজ্ঞান প্রযুক্তি ফি, ১৬ টাকা রেডক্রিসেন্ট ফি ও পাঁচ টাকা বিএনসিসি ফি দিতে হবে।
শিক্ষকদের এমপিও বা মূল বেতন থেকে ১০ শতাংশ এই দুই সুবিধার জন্য কেটে রাখা হয়, যার ৬ শতাংশ যায় অবসর সুবিধা খাতে ও ৪ শতাংশ কল্যাণ ট্রাস্টে। ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তার আগে অবসর ও কল্যাণের জন্য নেওয়া হতো ৬ শতাংশ। অর্থ কেটে রাখার পরিমাণ বাড়লেও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সেই টাকা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এনএম/এমএসএ