বিভিন্ন দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ সাবেক দুই মন্ত্রী ও তিন সংসদ সদস্যের (এমপি) বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বিভিন্ন দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ সাবেক দুই মন্ত্রী ও তিন সংসদ সদস্যের (এমপি) বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুই মন্ত্রী হলেন- মাদারীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং দিনাজপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।
তিন সংসদ সদস্য হলেন- নেত্রকোণা-৩ আসনের সাবেক এমপি অসীম কুমার উকিল ও তার স্ত্রী যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি অপু উকিল এবং সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশন থেকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে ২০১৪ সালে তলব করে দুদক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে এমপি হন, তবে তাকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি। নির্বাচনীয় হলফনামায় তিনি পেশা হিসেবে রাজনীতি, সাধারণ ব্যবসা ও অন্যান্য উল্লেখ করেছেন। সম্পদের অর্জনের মধ্যে রয়েছে- নিজ নামে দুটি গাড়ি, স্ত্রীর নামে ৯৬ ভরি সোনা, দুটি বাস, একটি গাড়ি ও একটি মাইক্রোবাস। এছাড়া স্ত্রীর নামে রয়েছে রাজউকের ১০ কাঠার প্লট ও অন্যান্য স্থাবর সম্পদ।
অসীম কুমার উকিল ও তার স্ত্রী অপু উকিলের বিরুদ্ধেও রয়েছে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। অভিযোগ আছে, অবৈধ সম্পদের অর্থে ঢাকার উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টর, ১৮ নম্বর রোড, ১৫ নম্বর বাড়িতে দুই ইউনিটে ৭তম তলা তথা ১৪টি প্লট ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করেছেন। ঢাকার ধানমন্ডি ১১ নম্বর রোড, ৪০ নম্বর বাড়িতে ৩টি ফ্ল্যাট, নেত্রকোনা জেলাধীন কেন্দুয়া পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত সাউদপাড়ায় রাজকীয় ব্যয়বহুল বাড়ি করেছেন। এছাড়া নেত্রকোনা সদর পৌরসভাধীন কাটলী মৌজায় মূল্যবান জায়গা, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত বাড়ি। দেশের বাইরে আমেরিকা ও কানাডায় এই দম্পত্তির দুই ছেলে সায়ক ও শুদ্ধের বাড়ি রয়েছে।
অন্যদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের হলফনামা ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ই-হলফনামায় স্ত্রীর নামে ২০ একর জমি, দিনাজপুর শহরে একটি বাড়ি, নিজ এলাকায় বহুতল ভবন, খামার বাড়ি, স্ত্রী-কন্যা-ভাইয়ের জন্য আলাদা আলাদা গাড়ি, দিনাজপুর রোডে শিবনগর ইউনিয়নের ফকিরপাড়ায় প্রায় ২৪ একর জমির ওপর একটি খামার বাড়ি রয়েছে।
হেনরীর বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। শুধু ২০২০-২১ অর্থবছরেই তিনি কালো টাকা সাদা করেছেন প্রায় ৩২ কোটি। নিজ জেলা শুধু সিরাজগঞ্জ নয়, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, পটুয়াখালী ও রাজধানী ঢাকায় তার অঢেল সম্পদের অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এরমধ্যে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জে গড়ে তুলেছেন ‘হেনরী ভুবন’।
আরএম/জেডএস