রাশিয়ায় আক্রমণের কথা স্বীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। টানা আড়াই বছর ধরে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন চলছে এবং এর মধ্যেই প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় হামলার কথা স্বীকার করলেন তিনি।
রাশিয়ায় আক্রমণের কথা স্বীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। টানা আড়াই বছর ধরে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন চলছে এবং এর মধ্যেই প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় হামলার কথা স্বীকার করলেন তিনি।
রোববার (১১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন— তার সামরিক বাহিনী রাশিয়ার পশ্চিম কুরস্ক অঞ্চলে আক্রমণ চালাচ্ছে। শনিবার রাতে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী যুদ্ধকে ‘হানাদারদের অঞ্চলের’ দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বিবিসি বলছে, রুশ ভূখণ্ডের ভেতরে ইউক্রেন তার অভিযান শুরু করার পাঁচ দিন পরে জেলেনস্কির পক্ষ থেকে এই স্বীকারোক্তি সামনে এসেছে। ইউক্রেনীয় এই আক্রমণ রাশিয়াকে কার্যত অবাক করে দিয়েছে এবং সীমান্তের উভয় পাশ জুড়ে জনসাধারণকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং সুমি অঞ্চলে রোববার ভোরে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেছেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলো ‘সক্রিয়’ রয়েছে এবং শহরে বিমান হামলার সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে।
টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে দেওয়া বার্তায় তিনি বেসামরিক নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে সতর্ক করেছেন। এছাড়া কিয়েভসহ এর আশপাশের অঞ্চল এবং পূর্ব ইউক্রেনের পুরোটাই বিমান হামলার সতর্কতার অধীনে রয়েছে বলে ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে।
এছাড়া শনিবারের ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনের ‘যোদ্ধাদের’ ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং বলেছেন, তিনি দেশটির সিনিয়র সামরিক কমান্ডার ওলেক্সান্ডার সিরস্কির সাথে রাশিয়ায় অভিযান নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেন প্রমাণ করছে— তারা প্রকৃতপক্ষে ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং আক্রমণকারীর ওপর প্রয়োজনীয় চাপ নিশ্চিতও করতে পারে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা রাশিয়ার অভ্যন্তরে ১০ কিমি (ছয় মাইল) এরও বেশি এলাকাজুড়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক একটি শহরও দখল করার চেষ্টা করছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ-মাত্রায় রুশ আক্রমণ শুরু করার পর থেকে এটিই এখন পর্যন্ত ইউক্রেনীয় বাহিনীর সবচেয়ে বড় অগ্রগতি।
এছাড়া রোববার ভোররাতে কুরস্কে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন — যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর — বলে এই অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেক্সি স্মিরনভ বলেছেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তাস নিউজ এজেন্সি অনুসারে, ইতোমধ্যেই সীমান্ত এই এলাকা থেকে ৭৬ হাজারেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং স্মিরনভ রোববার বলেন, তিনি কর্মকর্তাদের বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য অভিযান ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাশিয়া বলেছে, ট্যাংক এবং সাঁজোয়া যানসহ ইউক্রেনের এক হাজার সৈন্য গত মঙ্গলবার সকালে কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। এরপর থেকে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করেছে এবং আঞ্চলিক শহর সুদজা দখল করে নেওয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে বলেও জানা গেছে।
টিএম