রাঙামাটিতে মিছিলে ঢিল ছোড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উদ্ধুদ্ধ পরিস্থিতির পর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রাঙামাটিতে মিছিলে ঢিল ছোড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উদ্ধুদ্ধ পরিস্থিতির পর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সম্প্রীতি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে, শহরের পৌরসভা থেকে বনরূপা এবং কলেজ গেট থেকে জিমনেসিয়াম পর্যন্ত সভা সমাবেশ করা যাবে, তবে জিমনেসিয়াম থেকে বনরূপা পর্যন্ত এলাকায় কোনো মিছিল সমাবেশ করা যাবে না। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে কোনো মিছিল সমাবেশ করা যাবে না, তবে পূর্বানুমতি সাপেক্ষে ধর্মীয়, সামাজিক র্যালি করা যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে চিকিৎসা সহায়তা ও আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হবে; পুরো শহর সিসিটিভি ক্যামেরায় আওতায় আনা হবে।
দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করা হবে; গুজব রটনকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে; বনরূপার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা করে পর্যায়ক্রমে সহযোগিতা করা হবে; শহরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সম্প্রীতি রক্ষায় কমিটি হবে; শহরের পাঁচটি এলাকায় সম্প্রীতি সমাবেশ করা হবে।
সম্প্রীতি সভায় বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কেএসমং, রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নগেন্দ্র চাকমা, জামায়াতের জেলা আমির আব্দুল আলিম, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, রাঙামাটি অটোরিকশা চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবুসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা।
জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটির জোন কমান্ডার লে. কর্নেল এরশাদুল চৌধুরী, পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদ হোসেন সহ সরকারের দায়িত্বশীল বিভাগের প্রতিনিধিরা।
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়িতে গণপিটুনিতে একজন নিহত হওয়ার পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে দীঘিনালায় বাঙালিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। একপর্যায়ে সেখানে পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে রাতে জেলা সদরে গোলাগুলিতে ৩ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন রাঙামাটিতে আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিলে ঢিল ছোড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হন।
পাহাড়ি–বাঙালি সংঘর্ষের ঘটনায় পরদিন শুক্রবার দুপুরে রাঙামাটি পৌর এলাকায় জারি করা ১৪৪ ধারা জারি তুলে নেওয়া হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টা থেকে এই ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।
মিশু/এসএম