রংপুরে প্রায় দেড় লাখ শিশু-কিশোরী পাবে জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা

রংপুরে প্রায় দেড় লাখ শিশু-কিশোরী পাবে জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা

রংপুরে আট উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার শিশু-কিশোরীকে জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে পঞ্চম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিপড়ুয়া শিক্ষার্থী ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৯৯ এবং স্কুলবহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী বিভিন্ন কমিউনিটির ৪ হাজার ৫৫০ শিশু-কিশোরী রয়েছে।

রংপুরে আট উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার শিশু-কিশোরীকে জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে পঞ্চম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিপড়ুয়া শিক্ষার্থী ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৯৯ এবং স্কুলবহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী বিভিন্ন কমিউনিটির ৪ হাজার ৫৫০ শিশু-কিশোরী রয়েছে।

প্রথমবার সারা দেশের মতো রংপুরে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া ‘এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন’ সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। টিকা গ্রহণের শিশু-কিশোরীদের অনলাইন থেকে নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকা কার্ড সঙ্গে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর সিটি কর্পোরেশেনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সিটি প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আজমল হোসেন জানান, আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকা স্কুলগামী ও কমিউনিটি পর্যায়ের ৩১ হাজার ১৬৩ জন শিশু-কিশোরীকে এইচপিভি টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে। নারীদের জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে শিশু ও কিশোরীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এ টিকা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৫০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কমিউনিটি এলাকায় শিশু ও কিশোরীরকে এই টিকা দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নারীদের ক্যানসারজনিত মৃত্যুর মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এ রোগ প্রতিরোধে এইচপিভি টিকার একটি ডোজই যথেষ্ট। এইচপিভি টিকা এই রোগকে প্রতিরোধ করে। এই টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। এইচপিভি টিকা বাইরেও পাওয়া যায়। বাইরে কিনতে একটি দাম পড়বে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা। সেজন্য ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিপড়ুয়া ছাত্রী বা ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু ও কিশোরীদের সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে দেওয়া এই টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রসিক ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান ইবনে তাজ, মেডিকেল অফিসার ডা. পলাশ কুমার রায়, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

এদিকে বিকেলে সিভিল সার্জন মিলনায়তনে সিভিল সার্জন ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে জানান, সিটি কর্পোরেশন এলাকা ব্যতীত রংপুরের আট উপজেলায় স্কুলগামী পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিপড়ুয়া ১ লাখ ৪ হাজার ১৫২ জন এবং কমিউনিটি পর্যায়ে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৪ হাজার ৩৪ জনসহ মোট ১ লাখ ৮ হাজার ১৮৬ জন কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, ক্যানসার একটি মরণব্যাধি রোগ। বৈশ্বিকভাবে নারীরা যে সকল ক্যানসারে আক্রান্ত হন, তার মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসার বিশ্বে চতুর্থ। প্রতিবছর বিশ্বের ছয় লক্ষাধিক নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে তিন লাখের বেশি মৃত্যু হয়ে থাকে। সঠিক সময়ে শিশু ও কিশোরীদের এ টিকা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশ সরকার সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে এইচপিভি টিকা সংযোজন করেছে। টিকা গ্রহণ থেকে কেউ যাতে বাদ না পড়ে সেজন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সিভিল সার্জন জানান, ২০১৬ সালে দেশের গাজীপুরে পাইলট প্রকল্প কর্মসূচিতে এইচপিভি টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। ২০২৩ সালে ঢাকা বিভাগে এই টিকাদান কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় এ বছর ঢাকা ব্যতীত দেশের সব বিভাগে মাসব্যাপী ‘এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কারণ বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় পাঁচ হাজার নারীর মৃত্যু হয় জরায়ুমুখ ক্যানসারে। সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রুহুল আমিনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *