হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু। মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা। তিনি আল্লাহকে খুব বেশি ভয় করতেন। তিনি সব সময় আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে চলতেন। তাঁর জীবনের সব কাজের পেছনে একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল- পরকালীন মুক্তি, সাফল্য ও কল্যাণ পাওয়া।
হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু। মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা। তিনি আল্লাহকে খুব বেশি ভয় করতেন। তিনি সব সময় আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে চলতেন। তাঁর জীবনের সব কাজের পেছনে একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল- পরকালীন মুক্তি, সাফল্য ও কল্যাণ পাওয়া।
তাঁর অন্তরে আল্লাহর ভয় এত প্রবল ছিল যে, আল্লাহকে ভয় করার ক্ষেত্রে যেকোনো মুসলিমের জন্য উজ্জ্বলতম আদর্শ ছিলেন তিনি।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে উপস্থিত ছিলেন। এমন সময় কোরআনুল কারিমের এ আয়াত নাজিল হয়-
مَنۡ یَّعۡمَلۡ سُوۡٓءًا یُّجۡزَ بِهٖ ۙ وَ لَا یَجِدۡ لَهٗ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَلِیًّا وَّ لَا نَصِیۡرًا
‘যে ব্যক্তি কোনো মন্দ কাজ করবে, তাকে তার কাজের প্রতিফল দেওয়া হবে। আর সে আল্লাহর মোকাবিলায় কাউকেই নিজের বন্ধু ও সাহায্যকারী রূপে পাবে না।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১২৩)
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়াতটি হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে তেলাওয়াত করে শোনালেন। হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসুল!এ আয়াতটি শুনে আমার মনে হচ্ছে যে, আমার মেরুদণ্ডই ভেঙে গেছে। আমি তো লুটিয়ে পড়েছি। আমার বাবা-মা আপনার জন্য উৎসর্গ হোক! আমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে, যে কোনো মন্দ কাজ করেনি? আর আমাদের সবাইকেই আমাদের মন্দ কাজের প্রতিফল দেওয়া হবে।
এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আবু বকর! তুমি ও তোমাদের ঈমানদার ভাইয়েরা দুনিয়াতেই মন্দ কাজের প্রতিফল ভোগ করবে। তোমরা যখন আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হবে, তখন তোমাদের কোনো গুনাহই থাকবে না। আবার অন্য লোকদের অবস্থা এমন হবে যে, তাদের সব গুনাহই পুঞ্জীভূত করে রাখা হবে এবং কেয়ামতের দিন তাদেরকে তার প্রতিফল দেওয়া হবে।
অপর বর্ণনায় আছে, এ আয়াত নাযিল হলে সাহাবায়ে কেরাম অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়েন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যে কেউ কোন অসৎকাজ করবে, সে জন্য তাকে শাস্তি দেয়া হবে। আয়াতটি যখন নাজিল হল, তখন আমরা খুব দুঃখিত ও চিন্তাযুক্ত হয়ে পড়লাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে বললাম, এ আয়াতটি তো কোন কিছুই ছাড়েনি। সামান্য মন্দ কাজ হলেও তার সাজা দেয়া হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, চিন্তা করো না, সাধ্যমত কাজ করে যাও।
কেননা, (উল্লেখিত শাস্তি যে জাহান্নামই হবে, তা জরুরি নয়) তোমরা দুনিয়াতে যে কোন কষ্ট বা বিপদাপদে পড়, তাতে তোমাদের গুনাহের কাফফারা এবং মন্দ কাজের শাস্তি হয়ে থাকে। এমনকি যদি কারো পায়ে কাটা ফুটে, তাও গুনাহের কাফফারা বৈ নয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৭৪)