মিয়ানমারে বন্যা-ভূমিধসে নিহত বেড়ে ২২৬

মিয়ানমারে বন্যা-ভূমিধসে নিহত বেড়ে ২২৬

টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মিয়ানমারে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২২৬ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ৭৭ জন। মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে গত এক সপ্তাহে বন্যা-ভূমিধসে হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে।

টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মিয়ানমারে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২২৬ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ৭৭ জন। মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে গত এক সপ্তাহে বন্যা-ভূমিধসে হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে।

ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু অংশে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে; যার প্রভাবে এই অঞ্চলের কিছু দেশে ব্যাপক বৃষ্টি ও বন্যা শুরু হয়েছে। ইয়াগির আঘাত ও এর জেরে সৃষ্ট ঝোড়ো হাওয়া-প্রবল বর্ষণ-বন্যা ও ভূমিধসে ভিয়েতনামেও অন্তত ২৯২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া দেশটিতে আহত হয়েছেন আরও ৮ শতাধিক মানুষ।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নোবেলজয়ী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপর জান্তার সরকার ক্ষমতায় আসায় মিয়ানমারের সাড়ে ৫ কোটি মানুষের এক তৃতীয়াংশকে ইতোমধ্যে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হতে হয়েছে।

জান্তা সৈন্য ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহিংসতায় বিধ্বস্ত দেশটির রাজধানী নেপিদো, মান্দালয়, ম্যাগওয়ে এবং বাগো অঞ্চলের পাশাপাশি পূর্ব ও দক্ষিণের শান, মোন, কায়াহ এবং কায়িন রাজ্যজুড়ে ঝোড়ো হাওয়া ও প্রবল বর্ষণ দেখা দিয়েছে। তবে বৃষ্টি ও বন্যায় বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চল।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম বলছে, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা বৃষ্টি-বন্যা-ভূমিধসে অন্তত ২২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে নিখোঁজ রয়েছেন আরও প্রায় ৭৭ জন।

মিয়ানমারের সামরিক সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৯টি অঞ্চল ও রাজ্যে মোট ৩৮৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। শুভাকাঙ্ক্ষীরা এসব শিবিরে পানীয় জল, খাদ্য এবং পোষাক দান করেছেন।

জাতিসংঘের মানবিক দাতব্য সহায়তা বিষয়ক সমন্বয়কের কার্যালয় (ওসিএইচএ) বলেছে, ভারী বর্ষণ এবং বন্যায় কেবল মান্দালয় অঞ্চলেই প্রায় ৪০ হাজার একর কৃষি জমি তলিয়ে গেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ২৬ হাজার ৭০০ বাড়িঘর।

জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বলেছে, বন্যা-ভূমিধসে বেশ কিছু রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত এবং টেলিকম ও বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক সেবা ব্যাহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত অনেক অঞ্চলে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

চলতি বছর এশিয়ায় আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন ইয়াগির কারণে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ায় ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ওই দুই দেশের নদ-নদীর পানি উপচে শহরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এই ঝড়ের তাণ্ডব ও বন্যা-ভূমিধসে ভিয়েতনামে কমপক্ষে ২৯২ জন নিহত হয়েছেন।

ইয়াগির প্রভাবে থাইল্যান্ডে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় কমপক্ষে ৪৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। থাইল্যান্ডে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় মিয়ানমারের সীমান্ত লাগোয়া উত্তরের শহরগুলো প্লাবিত হয়েছে। লাওসে কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং ৪৪০টিরও বেশি পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির আটটি প্রদেশজুড়ে বন্যায় প্রায় ৭ হাজার ৮২৫ একর ধান ক্ষেত ডুবে গেছে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *