মাছ-মাংস-ডিমের দাম কমানোসহ ১৫ প্রস্তাব গণঅধিকার পরিষদের

মাছ-মাংস-ডিমের দাম কমানোসহ ১৫ প্রস্তাব গণঅধিকার পরিষদের

মাছ, মাংস ও ডিমের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা ও পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে বিশেষ টিম গঠনসহ ১৫টি প্রস্তাব জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।

মাছ, মাংস ও ডিমের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা ও পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে বিশেষ টিম গঠনসহ ১৫টি প্রস্তাব জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।

সোমবার (১৯ আগস্ট) সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের মধ্যকার আয়োজিত এক বৈঠকে এসব প্রস্তাব জানানো হয়।

বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁনসহ ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে ১৫টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো-

১. আগামী ১০ দিনের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব গ্রহণ এবং দুর্নীতিবাজ, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।

২. মাছ, মাংস ও ডিমের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে। দাম নিয়ন্ত্রণে ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে বিশেষ টিম গঠন করতে হবে এবং প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করতে হবে।

৩. পোলট্রি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে সহযোগিতা করতে হবে এবং নিজস্ব খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণে ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে, পশু পালন ও মৎস্য উৎপাদনে স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। 

৪. ইলিশসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ রপ্তানির আগে দেশীয় চাহিদা পূরণ করতে হবে।

৫. মাছ ও মুরগি দ্রুত বড় করতে ক্ষতিকর উপাদান বা খাদ্য ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ এসব ক্ষতিকর উপাদানে রয়েছে ক্যান্সারসহ নানা রোগের ঝুঁকি।

৬. পুষ্টিচাহিদা পূরণে প্রতিটা জেলা পর্যায়ে সমাজের সামর্থ্যহীন মানুষের জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বল্পমূল্যে মাছ ও মাংস বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। 

৭. পোলট্রি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত উন্নয়নে ও উদ্যোক্তা বৃদ্ধিতে শিক্ষিত বেকারদের প্রশিক্ষণ এবং বিনা সুদে ঋণ দানের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।

৮. মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও আনুগত্যকে বিবেচনায় না নিয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগের উদ্যোগ নিতে হবে।

৯. মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নের জন্য সঠিক বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে, যা এই খাতে গবেষণা, উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারে সহায়তা করবে।

১০. মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করার জন্য নিয়মিত অডিট এবং পাবলিক রিপোর্টিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

১১. মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নিতে হবে।

১২. মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদিত পণ্যসমূহের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে এবং রপ্তানির সুযোগ বাড়াতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা উচিত।

১৩. দেশের জলাশয়, নদী এবং মাছের প্রজনন কেন্দ্রগুলো সংরক্ষণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

১৪. মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের সঠিক পরিচালনা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচারাভিযান চালাতে হবে।

১৫. ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করতে হবে যাতে তারা উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে সক্ষম হয়।

এ সময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন— মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ডাক্তার সাজ্জাদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, মাহফুজুর রহমান খান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা, নেওয়াজ খান বাপ্পী, আবির ইসলাম সবুজ।

ওএফএ/এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *