মাকড়শার কামড় : মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন ব্রিটিশ পর্যটক

মাকড়শার কামড় : মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন ব্রিটিশ পর্যটক

ছোটো একটি মাকড়শার কামড়ে বিরল এক রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় মৃত্যুঝুঁকির মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন পর্যটক ও ব্রিটেনের নাগরিক নিগেল হান্ট (৫৯)। ঠিক সময়ে যদি তিনি হাসপাতালে না যেতেন, তাহলে তাকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব ছিল।

ছোটো একটি মাকড়শার কামড়ে বিরল এক রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় মৃত্যুঝুঁকির মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন পর্যটক ও ব্রিটেনের নাগরিক নিগেল হান্ট (৫৯)। ঠিক সময়ে যদি তিনি হাসপাতালে না যেতেন, তাহলে তাকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব ছিল।

এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, সম্প্রতি ভ্রমণের উদ্দেশে ইতালির সিসিলি দ্বীপে গিয়ে নেক্রোটিজিং ফ্যাসিটিস নামের একটি বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন নিগেল। একধরনের বিরল ব্যাকটেরিয়া এই রোগের জন্য দায়ী এবং এই ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির দেহের মাংস খেয়ে ফেলে। আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু অসহনীয় যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে হয়। এই রোগটির কোনো চিকিৎসা নেই। তবে ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হওয়ার আগে ব্যবস্থা নিয়ে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বিবিসিকে নিগেল জানান, সিসিলিতে যে হোটেলে তিনি ছিলেন, সেখানে গত ৩০ আগস্ট হোটেল কক্ষে একটি ছোটো মাকড়শা কামড়েছিল তার পেটে। সামান্য ব্যাথা ছাড়া সে সময় আর কোনো উপসর্গ তিনি বোধ করেননি।

কিন্তু সংকট শুরু হয় চার দিন পর। ততদিনে তিনি সিসিলি থেকে ফিরে মিসরের সমুদ্র তীরবর্তী পর্যটন শহর শারম আল শেইখের উদ্দেশে রওনা দেন। যাত্রাপথেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন নিগাল এবং আবিষ্কার করেন পেটের ওপর একটি ফোঁড়া।

শারম আল শেইখ হাসপাতালে ছুটে যান নিগেল। হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রাথমিক পরীক্ষার পর জানান, মাকড়শাটির কামড়ের মাধ্যমে ভয়াবহ মাংস-খেকো জীবাণু প্রবেশ করেছে নিগালের দেহে এবং তিনি যদি এই রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে চান, তাহলে জরুরিভিত্তিকে অস্ত্রোপচার করে ফোঁড়াটি কেটে ফেলে দিতে হবে।

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অস্ত্রোপচার করান নিগেল। বর্তমানে বিপদমুক্ত আছেন তিনি।

বিবিসিকে নিগেল বলেন, “সিসিলি থেকে উড়োজাহাজে ওঠার পর থেকেই শরীর খারাপ লাগছিল। বিমানপথের পুরো যাত্রা মাথা ব্যাথায় কাহিল হয়ে পড়েছিলাম। শারম আল শেইখে নামার পর প্রথমেই একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাই। সেখানকার ডাক্তররা আমাকে অ্যান্টি বায়োটিক ওষুধ দিয়ে শিগগিরই হাসপাতালে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।”

“হাসপাতালে পৌঁছানোর পর রক্ত ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক পরীক্ষার জন্য আমার দু’দিন ব্যয় হয়। ওই দু’দিন ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে যন্ত্রণাপূর্ণ সময়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎকরা জানান, আমি যদি এখনই অস্ত্রোপচার করাই, তাহলে বেঁচে যাবো। আমি তাদের কথা মেনে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে সম্মতি দিই।”

হাসপাতালের চিকিৎসকদের যে দলটি তার অস্ত্রোপচার করেছে, সেটির এক সদস্য বিবিসিকে বলেন, “নিগালকে সম্ভবত ফলস উইডো কিংবা ব্রাউন রিক্লুজ জাতীয় কোনো মাকড়শা কামড়ে ছিল। এই মাকড়শাটি অনেক সময় মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়ার বাহক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।”

“বাহক কোনো মাকড়শা যদি কোনো ব্যক্তি বা স্তন্যপায়ী কোনো পশুকে কামড়ায়, তাহলে ৬ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ওই ব্যক্তি নেক্রোটিজিং ফ্যাসিটিসে আক্রান্ত হন। নিগেল সৌভাগ্যবান, ৬ দিন পেরোনোর আগেই অস্ত্রোপচার করেছেন। এখন তিনি বিপদমুক্ত।”

সূত্র : বিবিসি

এসএমডব্লিউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *