মহানবী সা.-এর জন্মের মুহূর্তটি যেমন ছিল

মহানবী সা.-এর জন্মের মুহূর্তটি যেমন ছিল

মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা.-এর জন্ম ছিল বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ। যখন পুরো বিশ্ব অস্থির সময় পার করছিল, মানুষের মাঝে ন্যায়-অন্যায়, পাপ-পূণ্যের বিবেচনাবোধ লোপ পেয়েছিল। প্রভাবশালীরা সমাজের নিম্নবিত্তের উপর অত্যাচারের খড়ক চালাতো, নিজেদের সবার সেরা ভাবতো, সমাজের প্রতিটি স্তরে শ্রেণী বৈষম্য তৈরি হয়েছিল, নারীদের মনে করা হতো সমাজ, পরিবারে বোঝা ও লজ্জার কারণ। লজ্জার দাগ মুছতে কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। 

মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা.-এর জন্ম ছিল বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ। যখন পুরো বিশ্ব অস্থির সময় পার করছিল, মানুষের মাঝে ন্যায়-অন্যায়, পাপ-পূণ্যের বিবেচনাবোধ লোপ পেয়েছিল। প্রভাবশালীরা সমাজের নিম্নবিত্তের উপর অত্যাচারের খড়ক চালাতো, নিজেদের সবার সেরা ভাবতো, সমাজের প্রতিটি স্তরে শ্রেণী বৈষম্য তৈরি হয়েছিল, নারীদের মনে করা হতো সমাজ, পরিবারে বোঝা ও লজ্জার কারণ। লজ্জার দাগ মুছতে কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। 

ইতিহাসের এমন সংকটময় মুহুর্তে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীবাসীর জন্য রহমতের বার্তা দিয়ে প্রেরণ করলেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা.-কে। তিনি এসে সমাজের বর্ণ-বৈষম্য দূর করলেন।

জানালেন, তোমাদের রব আল্লাহর কাছে কারো প্রভাব-প্রতিপত্তি বা বিশেষ কোনো বর্ণের প্রাধান্য নেই। তিনি সবাইকে ভালোবাসেন তাকওয়া ও খোদাভীতির ভিত্তিতে। তিনি তোমাদের সম্পত্তিতে নারীকে অংশ দিয়েছেন। তোমরা কারো ওপর জুলুম করো না। আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি জুলুমের হিসাব নেবেন।

সাম্যের নবী মুহাম্মদ সা.-এর জন্মের মুহূর্তটি কেমন ছিল? তাঁর আগমনের সেই মুহূর্ত ইতিহাসের পাতায় সংরক্ষিত রয়েছে। তাঁর জন্মের মুহূর্ত নিয়ে ফাতিমা বিনতে আবদুল্লাহ রা. বলেন—

যখন নবী সা.–এর শুভাগমন ঘটল, তখন আমি আমিনার (নবীজির মা) কাছে উপস্থিত ছিলাম। আমি দেখলাম, প্রতিটি ঘর উজ্জ্বল আলোয় ভরে গেছে। এ-ও দেখলাম, আসমানের তারকারাজি এত কাছে এসেছে যে আমার মনে হলো এই তারকা আমার ওপর পতিত হবে।’ (ফাতহুল বারি: ৬/ ৪২৬) 

আরেক বর্ণনায় ইরবাস ইবনে সারিয়্যা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা.-এর শুভজন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পান, এর মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে যায়। (মুসতাদরাকে হাকিম; মিশকাত: ৫৭৫৯) 

আরেক হাদিসে হজরত ইবনে সুফিয়ান বর্ণনা করেছেন, আয়শা রা. বলেন, বিশ্ব নবী সা.-এর জন্মগ্রহণের সময় এক ইহুদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে মক্কা নগরীতে বসবাস করত। যে রাতে বিশ্ব নবী পৃথিবীতে আগমন করেন, সে রাত-পরবর্তী সকালে সে কুরাইশদের কাছে জিজ্ঞেস করল, গত রাতে এ এলাকাতে কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে কি? 

উপস্থিত কুরাইশের লোকেরা বলল, এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। লোকটি বলল, তোমরা এ বিষয়টির অনুসন্ধান করো। কেননা এই রাতে বর্তমান উম্মতের নবী ভূমিষ্ঠ হয়েছেন। তাঁর কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে একটি বিশেষ নিদর্শন (অর্থাৎ মোহরে নবুয়ত) রয়েছে। জন্মের পরপর শিশুটির মুখে জিন আঙুল পুরে রাখার দরুন শিশুটি দুদিন ধরে কারও দুধ পান করবে না। 

কুরাইশের লোকেরা সন্ধান করে জানতে পারল, আবদুল মুত্তালিবের প্রিয় পুত্র আব্দুল্লাহর এক পুত্রসন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। ইহুদিকে এ সংবাদ জানানো হলে সেও শিশুটিকে দেখার আগ্রহ ব্যক্ত করে বলল, চলো। আমিও শিশুটিকে দেখব। ইহুদি লোকটি যখন শিশুটিকে দেখল এবং তাঁর দুই কাঁধের মাঝে মোহরে নবুয়তের নিদর্শনও দেখতে পেল, তখন সে চিৎকার দিয়ে বেঁহুশ হয়ে গেল। হুঁশ ফিরে আসার পর লোকটি বলল, ‘নবুয়তে বনি ইসরাইল আজ থেকে শেষ হয়ে গেল। হে কুরাইশ সম্প্রদায়! ভবিষ্যতে এই শিশু তোমাদের প্রতি এমন এক আক্রমণ পরিচালনা করবে, যার সংবাদ পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে।’ (ফাতহুল বারী : ৬ /৪২৫)

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *