ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে দক্ষিণাঞ্চল, অন্ধকারে অধিকাংশ এলাকা

ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে দক্ষিণাঞ্চল, অন্ধকারে অধিকাংশ এলাকা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে ভারী বৃষ্টিপাতে তলিয়ে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা। বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুরসহ আশপাশের সব জেলায় টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে ওই অঞ্চলে। বৃষ্টিতে সড়কগুলোতে পানি জমে গেছে। কয়েক জেলার লাখ লাখ মানুষ এক প্রকার পানিবন্দি হয়ে আছেন।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে ভারী বৃষ্টিপাতে তলিয়ে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা। বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুরসহ আশপাশের সব জেলায় টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে ওই অঞ্চলে। বৃষ্টিতে সড়কগুলোতে পানি জমে গেছে। কয়েক জেলার লাখ লাখ মানুষ এক প্রকার পানিবন্দি হয়ে আছেন।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় অবিরাম বৃষ্টি ঝরছে। মেঘনা নদীর ভোলার তজুমদ্দিন পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহীত হচ্ছে, এ ছাড়া অন্য সব নদনদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে যেকোনো সময় তা বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুমন বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। শহরের প্রতিটি সড়কে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। আজ রিকশা নিয়ে বের হলেও রাস্তায় যাত্রী খুব কম ছিল।

বটতলা এলাকার বাসিন্দা মাহমুদ হোসেন বলেন, বটতলা থেকে হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা পর্যন্ত পানিতে ডুবে আছে। এই সড়কটি বেশি জোয়ার হলেও ডোবে, বৃষ্টি হলেও ডোবে। আমরা এলাকাবাসী খুবই অসুবিধার মধ্যে আছি।

তিনি বলেন, বাইরে যেমন টানা বৃষ্টি, তেমনি নেই বিদ্যুৎ। মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ এলেও তা ১০ মিনিটও থাকে না। খাবারের ও ব্যবহারের পানি শেষ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছি।

বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের কৃষক রবিউল মোল্লা বলেন, জমি আবাদের জন্য বৃষ্টি ভালো হলেও এখন অতিরিক্ত বৃষ্টিতে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। চাষাবাদের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, মুলাদী উপজেলার মেঘনা-তীরবর্তী গ্রামগুলোতে অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসব উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিকরা।

পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বেতমোড় গ্রামের কবির মাতুব্বর জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়েছে। পৌর শহরে বিদ্যুৎ মাঝে মধ্যে এলেও গ্রামের লাইনগুলোতে বিদ্যুৎ আসেনি।

বরগুনা পৌর শহরে বিদ্যুৎ থাকলেও উপজেলাগুলোতে নেই। একই অবস্থা ভোলায় বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে ১২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত আরও ২৪ ঘণ্টা হওয়ার পূর্বাভাস আছে। এ সময়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ২৪ নটিক্যাল মাইল। মূলত লঘুচাপের কারণে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) বরিশাল বিভাগীয় পরিচালন ও নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইমানুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ কম—এটি একটি কারণ। দ্বিতীয়ত, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের করণেও লোডশেডিং হচ্ছে। আবহাওয়া ঠিক হলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কমে যাবে।

বরিশাল বিভাগীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপপরিচালক দিলীপ কুমার শিকদার বলেন, আবহাওয়ার জন্য অধিকাংশ উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। আবহাওয়া ঠিক হলে সমস্যা কমে আসবে। এ ছাড়া কারিগরি কোনো ত্রুটি নেই।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *