২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর। নাগপুর টেস্টের শেষ বল করলেন গৌতম গম্ভীর। ইয়ান বেল ঠেকালেন সেই নিরীহদর্শন বলটা। ড্র হলো টেস্ট। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমের পর প্রথমবার ভারতের মাটিতে ইংল্যান্ড জয় করেছিল টেস্ট সিরিজ। তারিখটা এরপর থেকে ভারতের ক্রিকেটে একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। কারণ, সেদিনের পর থেকে আর কখনো নিজেদের মাঠে সিরিজ হারেনি ভারত।
২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর। নাগপুর টেস্টের শেষ বল করলেন গৌতম গম্ভীর। ইয়ান বেল ঠেকালেন সেই নিরীহদর্শন বলটা। ড্র হলো টেস্ট। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমের পর প্রথমবার ভারতের মাটিতে ইংল্যান্ড জয় করেছিল টেস্ট সিরিজ। তারিখটা এরপর থেকে ভারতের ক্রিকেটে একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। কারণ, সেদিনের পর থেকে আর কখনো নিজেদের মাঠে সিরিজ হারেনি ভারত।
অ্যালিস্টার কুকের অধীনে সেই ইংল্যান্ড দলের পর অনেকে এসেছে ভারতের মাঠে টেস্ট খেলতে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ কিংবা শ্রীলঙ্কা- সবাই খেলে গিয়েছে ভারতের মাঠে। কিন্তু সাদা পোশাকে ভিরাট কোহলি-রোহিত শর্মা বা মহেন্দ্র সিং ধোনিদের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারেনি কেউই।
চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্ট জয়ের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ হারছে না বাংলাদেশ, সেটাও নিশ্চিত হয়ে গেছে। কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ জিতে গেলেও সিরিজ শেষ হবে ১-১ সমতায়। ক্যালেন্ডারের পাতায় গাণিতিক হিসাব বলছে, আজকের এই জয়ের পর ৪ হাজার ২৯৭ দিন বা ১১ বছর ৯ মাস ৫ দিন ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে হারেনি ভারত।
টিম ইন্ডিয়ার পরের হোম সিরিজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। অক্টোবরের ১৬ তারিখ থেকে টিম সাউদিদের বিপক্ষে মাঠে নামবে ভারত। সেই সিরিজ যেদিন মাঠে গড়াবে সেদিন পর্যন্ত ভারতের অজেয় থাকার মোট সময় হবে ৪ হাজার ৩২১ দিন বা ১১ বছর ৯ মাস ৩০ দিন।
এদিকে ঘরের মাঠে টানা সবচেয়ে বেশি টেস্ট সিরিজ জয়ের বিশ্বরেকর্ডও এখন ভারতের দখলে। বাংলাদেশ সিরিজের আগেই নিজেদের মাঠে টানা ১৭ সিরিজ জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। এর আগে ঘরের মাঠে সবচেয়ে বেশি সিরিজ জয়ের রেকর্ড ছিল অস্ট্রেলিয়ার। দুই দফায় ঘরের মাঠে টানা ১০ টেস্ট সিরিজ জয় করেছিল তারা।
সামগ্রিক বিচারে টেস্ট সিরিজে অপরাজেয় থাকার রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের। আশির দশকের শুরু থেকে নব্বইয়ের দশকের অনেকটা সময় পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে অজেয় ছিল এক সময়ের প্রবল শক্তিধর দলটি। সেসময় ঘরে-বাইরে মিলিয়ে ২৯ টেস্ট সিরিজে অপরাজিত ছিল তারা। ১৯৮০ থেকে পরের ১৪ বছর টেস্টে অজেয় ছিল উইন্ডিজরা।
ঘরের মাঠে ভারতের এমন সাফল্যের জন্য অবশ্য অনেকে আঙুল তুলেছেন অতিমাত্রায় স্পিন সহায়ক পিচ এবং ভারতের বিশেষ এসজি বলের দিকে। সারাবিশ্বে একমাত্র দেশ হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে হাতে তৈরি এসজি কোম্পানির বল ব্যবহার করে ভারত। যা উপমহাদেশের বাইরে থাকা দলগুলোর বিপক্ষে কিছুটা বাড়তি সুবিধা তৈরি করেছে তাদের জন্য।
তবে এসবের বাইরে টেস্টে ভারত ভীষণ ধারাবাহিক সেটা স্বীকার করবেন যে কেউই। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বিগত দুই চক্রে ভারত ফাইনাল খেলেছে। অস্ট্রেলিয়া কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে সিরিজ জয়ের স্বাদও পেয়েছে তারা। ক্রিকেট দুনিয়ায় ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বরের মতো আরেকটা দিন আসতে তাই হয়ত অনেক দিন অপেক্ষা করতে হবে।
জেএ