মাত্র ছয় ঘণ্টায় চাকরি পেলেন হাজার বেকার যুবক। তাদের বেতনও কম নয়। ১২টি পদে নিয়োগ পাওয়া একেক জনের বেতন প্রতি মাসে ১২ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
মাত্র ছয় ঘণ্টায় চাকরি পেলেন হাজার বেকার যুবক। তাদের বেতনও কম নয়। ১২টি পদে নিয়োগ পাওয়া একেক জনের বেতন প্রতি মাসে ১২ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
চাকরির জন্য লাগেনি ব্যাংক ড্রাফট, করতে হয়নি লিখিত আবেদন। কয়েক মিনিটের ভাইভা ও পদ অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষায় চাকরি মিলেছে বেকার যুবকদের। স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের এ চাকরির মেলা বসেছিল রংপুর সিটি কর্পোরেশনের বুড়িরহাট এলাকায়।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বুড়িরহাটের আনন্দলোক ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ‘জব ফেয়ার’। তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে সকাল থেকে বৃহত্তর রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসতে শুরু করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে তরুণদের ভিড় ও উৎকণ্ঠা। এক সময় সেই অপেক্ষা, উৎকণ্ঠা উতরে যায়।
ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, জোনাল ম্যানেজার, ইন্সপেকশন অফিসার, মনিটরিং অফিসার, সর্টিং হিরো, ডাটা এন্ট্রি, ড্রাইভার, হেল্পার, রাইডার ও ওয়্যারহাউজ ম্যানেজমেন্ট— এই ১২টি পদে পাঁচ হাজার সিভি জমা হয় সকাল ১১টা পর্যন্ত। কিছুক্ষণ পরে নেওয়া হয় সাক্ষাৎকার এবং পদ অনুযায়ী বিকেল পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
বিকেলের পর থেকে এক এক করে বিভিন্ন পদের ফল ঘোষণা করা হয়। চাকরি পেয়ে খুশি হন চাকরিপ্রত্যাশী যুবকরা। শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র হাতে নিয়ে মাসের পর মাস ঘুরেও যেখানে চাকরি পাওয়া যায় না, সেখানে একদিনে ভাইভা-লিখিত পরীক্ষায় চাকরি পাওয়ায় আনন্দে-উচ্ছ্বাসে পুলকিত হয়ে ওঠেন তারা।
বেকারত্ব ঘোচানোর এমন সুযোগ সৃষ্টির পেছনে যার অবদান তার নাম কে এম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন। তিনি স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিস লিমিটেডে প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। তার এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটিতে রংপুরের কয়েক হাজার তরুণ-যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।
রুহুল নামের এক চাকরিপ্রত্যাশী বলেন, এই চাকরির জন্য ব্যাংক ড্রাফট, আবেদন কিছুই লাগেনি। লিখিত পরীক্ষা ও কয়েক মিনিটের ভাইভায় চাকরি পেলাম। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক খুশি।
চাকরির মেলা অনুষ্ঠানের অতিথি ছিলেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু হোসেন চঞ্চল, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর সুলতানা পারভীন, রিপোর্টার্স ক্লাব, রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু। আরও উপস্থিত ছিলেন স্টেডফাস্ট কুরিয়ার লিমিটেডের এইচআর ম্যানেজার রেজাউল করিম রাযী ও অপারেশন ম্যানেজার মনিরুজ্জামান লিখন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু বলেন, পিছিয়ে পড়া রংপুরকে উন্নত করতে হলে চাকরির পাশাপাশি উদ্যোক্তা হতে হবে যুবকদের। গঙ্গাচড়া উপজেলার সন্তান তরুণ উদ্যোক্তা কে এম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন তার প্রতিষ্ঠানে হাজার বেকার যুবককে চাকরি দিয়ে যে মহানুভবতা দেখালেন, তা মনে রাখবে তাদের পরিবারগুলো।
প্রতিষ্ঠানের সিইও কে এম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন বলেন, স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিস লিমিটেডে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার বেকার যুবকের চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে। যাদের বেশিরভাগ কর্মীদের বাসা রংপুর বিভাগে। যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি হবে কর্মীদের। স্টেডফাস্ট একাডেমির মাধ্যমে আইসিটি ও ইংরেজি বিষয়ে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিস ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে। খুব অল্প সময়ে সারাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ৪৬০ শাখার মাধ্যমে কুরিয়ার সেবা দিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/রংপুর