বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তিন দফা দাবি ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্টদের

বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তিন দফা দাবি ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্টদের

দেশের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও স্পিচ ও ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্টরা নানাবিধ বৈষম্যের শিকার বলে জানিয়েছে সোসাইটি অব স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট (এসএসএলটি)। এ অবস্থায় ‘বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল’ আইন বাস্তবায়রে অবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

দেশের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও স্পিচ ও ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্টরা নানাবিধ বৈষম্যের শিকার বলে জানিয়েছে সোসাইটি অব স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট (এসএসএলটি)। এ অবস্থায় ‘বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল’ আইন বাস্তবায়রে অবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেখের টেকে বাংলাদেশ থেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

এতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন এসএসএলটির নির্বাহী সদস্য আহাম্মদ শরীফ সাকিব। তিনি বলেন, স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্বতন্ত্র চিকিৎসা পেশা। একজন স্পিচ থেরাপি চিকিৎসক কথা, ভাষা, যোগাযোগ, বাক, শ্রবণ, কণ্ঠস্বর, খাবার চিবানো ও গলধঃকরণসংক্রান্ত প্রতিবন্ধিতা ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা রোগীর সমস্যা নির্ণয় করে এবং এ সংক্রান্ত পরীক্ষণ-নিরীক্ষণ, চিকিৎসা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রয়োগসহ উপদেশ, চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র প্রদান করে থাকেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের জন্য যে কোড রেখেছে সেখানে স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্টদের কোডভিত্তিক স্বাস্থ্য পেশাজীবী হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহতদের সেবায় নিজেদের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ও গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া মানুষের একটি বড় অংশের কণ্ঠস্বরের সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে। উচ্চস্বরে ও স্লোগানে নিজেদের অধিকারের কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠের ওপর চাপ পড়েছে, ফলে দীর্ঘদিন ধরে কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, কণ্ঠনালীর আশ-পাশে ব্যথাসহ বিভিন্ন উপসর্গের রোগীরা আসছেন স্পিচ অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপি চিকিৎসার জন্য। উচ্চমাত্রার সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ, টিয়ার শেল ও গুলিবর্ষণের বিকট আওয়াজে অনেকেই আগের মতো ভালো শুনতে পাচ্ছেন না। অনেকে অল্প শব্দেই অনেক বেশি সংবেদনশীল হচ্ছেন। নিজে ভালো শুনতে পাচ্ছেন না দেখে জোরে জোরে কথা বলছেন। তাদের শ্রবণ সমস্যা নির্ণয় করে কথা বলা ও যোগাযোগ এর চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গুলিবিদ্ধ অনেকেই আসছেন যাদের মেরুরজ্জুতে আঘাত পাওয়ার কারণে স্নায়বিক বৈকল্যের শিকার হয়েছেন। শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা তৈরি হয়েছে, কণ্ঠস্বরের সমস্যা ও খাবার গলাধঃকরণ সংক্রান্ত সমস্যাও তৈরি হয়েছে। এসব রোগীর উন্নত নিউরো রিহ্যাবিলিটেশন স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য যথার্থ স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি চিকিৎসা সেবা যেন নিশ্চিত হয় এবং রোগীরা যেন ক্ষতির শিকার না হন সেজন্য বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন ২০১৮ এর তফসিলে স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্টের যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর জন্য স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের অধীনে পরিচালিত এক বছর ইন্টার্নশিপসহ পাঁচ বছর মেয়াদি বিএসসি ইন স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি কোর্স রয়েছে। এ কোর্সে ভর্তি হতে হলে সব ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে এসএসসি এবং এইচএসসিতে ন্যূনতম জিপিএ-৮  হ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জীববিজ্ঞান নিয়ে পাস করতে হয়।

স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইনের মাধ্যমে এখনও পেশাজীবীদের নিবন্ধন ও লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ফলে দেশের আইন স্বীকৃত প্রকৃত ও দক্ষ বিএসসি ডিগ্রিধারী স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্টের চিকিৎসা ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাই রিহ্যাবিলিটেশন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি ও আইন অনুযায়ী ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রিধারী স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট পেশাজীবীদের নিবন্ধন ও প্র্যাকটিশনারের লাইসেন্স দিতে বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের দৃশ্যমান পদক্ষেপের জোরালো দাবি জানাচ্ছি।

টিআই/জেডএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *