বিএনপি নেতার দোকান দখল, তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ চাইলেন ব্যবসায়ী

বিএনপি নেতার দোকান দখল, তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ চাইলেন ব্যবসায়ী

নোয়াখালীর চাটখিলে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলাউদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর দুই কোটি টাকা মূল্যের তিনটি দোকান দখলের অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট উপজেলার চাটখিল বাজারের দোকানগুলো তিনি দখলে নেন। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে দাবি ভুক্তভোগীর।

নোয়াখালীর চাটখিলে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলাউদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর দুই কোটি টাকা মূল্যের তিনটি দোকান দখলের অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট উপজেলার চাটখিল বাজারের দোকানগুলো তিনি দখলে নেন। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে দাবি ভুক্তভোগীর।

ভুক্তভোগী আশ্রাফুল আজিম রুবেল চাটখিল পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের চাটখিল গ্রামে আবুল বাসারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন।

জানা যায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর উপজেলার চাটখিল বাজারের ব্যবসায়ী আশ্রাফুল আজিম রুবেলের দোকানঘর দখলে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলাউদ্দিন ভূঁইয়া। গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন ২০-২৫ জন লোক নিয়ে এসে ভাড়াটিয়াদেরকে দোকান থেকে বাইরে বের হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। ভুক্তভোগী রুবেল ঘটনাস্থলে গেলে আলাউদ্দিন ভূঁইয়া ও কোপিল উদ্দিন ভূঁইয়া ভুক্তভোগীকে লাঠি দিয়ে ধাওয়া করে।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি চাটখিল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আশ্রাফুল আজিম রুবেল বলেন, ৭ আগস্ট আমাকে আলাউদ্দিন ভূঁইয়া লাঠি দিয়ে দোকান থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ভাড়াটিয়াদেরকে বলে এটা সরাকারি জায়গা বর্তমানে সরকার আমাদের, তাই এই দোকান এখন থেকে আমাদের। তারপর ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্টাম্পে স্বাক্ষর করান ও নগদ ৪ লাখ টাকা নিয়ে যায়। এবং প্রতিদিন তাদের কাছ থেকে জোর পূর্বক দৈনিক হারে ভাড়া আদায় করে নেন। পরে এ ব্যপারে আমি গত ২২ আগস্ট চাটখিল থানায় দায়ের করি। 

তিনি আরও বলেন, থানা পুলিশের কাছে কোনো প্রতিকার না পেয়ে আমি গত ২ সেপ্টেম্বর সেনা ক্যাম্পে একটি অভিযোগ দায়ের করি। সেনা কর্মকর্তা আমার কাগজপত্র দেখে আমাকে বলে আপনার দোকানের ভাড়া আপনি যেভাবে আগে উঠাতেন সেভাবে এখনও উঠাবেন। আমি পরেরদিন ৩ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার সময় আমার দোকানে ভাড়া উঠাতে গেলে বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন ও কোপিল উদ্দিন আমাকে মারধর করে এবং গুলি করে মারার হুমকি দিয়ে আমাকে ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেয়। আমার ভাড়াটিয়াদের থেকে দৈনিক হারে ভাড়া দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। 

এই ব্যবসায়ী বলেন, পরের দিন আমি সেনা ক্যাম্পে গেলে সেনা কর্মকর্তা পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেয়। ওইদিন এএসআই আমজাদ হোসেন ঘটনাস্থলে এসে ভাড়াটিয়াদেরকে নির্দেশ দেয় আলাউদ্দিন ভূঁইয়া ও কোপিল উদ্দিন ভূঁইয়াকে ভাড়া না দেওয়ার জন্য। পরবর্তী ১৪ সেপ্টেম্বর আমাদের উভয়পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসার জন্য অনুরোধ করেন। আমরা উভয়পক্ষ থানায় হাজির হলে ওখানে আলাউদ্দিন ভূঁইয়া এটা সরকারি জায়গা প্রমাণ করতে না পেরে থানার কথা অমান্য করে দৈনিক আমার ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ভাড়া আদায় করে। বর্তমানে বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন ভূঁইয়া আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তাই আমরা নিরুপায় হয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করে ব্যবসায়ী আশ্রাফুল আজিম রুবেল বলেন, আমাদের দোকানের মালিকানার সব প্রমাণ ও কোর্টের আদেশ আমাদের কাছে আছে। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ৩টি দোকান করে ভাড়া দিয়েছি। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমাদের দোকানঘর দখল করেছে আলাউদ্দিন ভূঁইয়া। আমি থানায় ও আর্মি ক্যাম্পে অভিযোগ দেওয়ার পর ওই নেতা নানাভাবে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই জবরদখলকারী বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন ভূইয়া ও কোপিল উদ্দিন ভূইয়া হাত থেকে বাঁচতে  আমি তারেক রহমান স্যারের হস্তক্ষেপ চাই। 

জবরদখল ও হত্যার হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেন চাটখিলে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলাউদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি কখনো এমন কাজ করিনি। আমি কেমন তা সব দলের মানুষ জানে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এমন অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। 

থানায় অভিযোগের বিষয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ইমদাদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর অভিযোগ আমরা পেয়েছি। যেহেতু জায়গা জমি সংক্রান্ত তাই আদালতের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। তারা থানায় বসতে চাওয়ায় তাদের উভয়পক্ষের সঙ্গে একটা বৈঠক হয়েছে। তবে সেটি অমিমাংসিত ছিল। আসলে জায়গা জমির বিষয়ে পুলিশের কিছু করার নেই। তাই আমরা আদালতের আশ্রয় নিতে বলেছি।

হাসিব আল আমিন/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *