বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলেসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, স্ত্রীর যাবজ্জীবন

বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলেসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, স্ত্রীর যাবজ্জীবন

ফরিদপুর সদরের কানাইপুর লক্ষ্মীপুর মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহাজাহান বেপারীকে (৫৫) হত্যার দায়ে ছেলেসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

ফরিদপুর সদরের কানাইপুর লক্ষ্মীপুর মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহাজাহান বেপারীকে (৫৫) হত্যার দায়ে ছেলেসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ আদেশ দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন—নিহতের ছেলে ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর মধ্যপাড়া গ্রামের শাওন বেপারি, একই ইউনিয়নের করিমপুর উত্তরপাড়া এলাকার মো. শামীম মোল্লা ও মো. আকমল মোল্লা। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে নিহতের স্ত্রী রাশিদা বেগমকে (৬০)। তাকেও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

রায় ঘোষণার সময় নিহতের ছেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শাওন বেপারি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তবে অন্য আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আসামিদের পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শাহজাহান বেপারি দীর্ঘ ১৭ বছর চাকরির সুবাদে মালয়েশিয়া ছিলেন। মৃত্যুর তিন বছর আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর পুনরায় বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।

২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে শাহাজাহান বেপারীকে তার নিজ কক্ষ থেকে রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার মাথার পেছনে, বাম চোখের ওপর, থুথনিসহ গলার নিচ পর্যন্ত, বুকের বাম পাশে এবং বাম হাতের কনুইয়ের ওপর ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই দুলাল বেপারি (৫৮) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর নিহতের স্ত্রী, ছেলেসহ আটজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের পিপি নওয়াব আলী মৃধা বলেন, আদালত নিহতের ছেলেসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং স্ত্রীকে যাবজ্জীন কারাদণ্ড দেন। এ মামলার বাকি চার আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

‘এটি একটি যুগান্তকারী রায়’—মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ রায়ের ফলে দেশে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে এবং সমাজে শৃঙ্খলা ফিরে আসতে ভূমিকা রাখবে। এতে প্রমাণ হয় হত্যাকারী অতি নিকটজন হলেও আইনের হাত থেকে তার রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই।

জহির হোসেন/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *