প্লাস্টিক জমা দিলেই মিলছে চাল-ডাল-মুরগি

প্লাস্টিক জমা দিলেই মিলছে চাল-ডাল-মুরগি

ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আফসানা বেগম। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামে পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খান তিনি।

ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আফসানা বেগম। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামে পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খান তিনি।

তবে সোমবার (২১ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁও পৌর কমিউনিউটি সেন্টারে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন আয়োজিত প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোরে তিন কেজি প্লাস্টিক জমা দিয়ে ব্যাগ ভরে বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরছেন আফসানা বেগম। 

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এই আয়োজন হাসি ফুটিয়েছে ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের অনেক হতদরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষের মুখে। এখানে প্লাস্টিক জমা দিলেই মিলছে চাল, ডাল, চিনি ও মুরগিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। 

জানা যায়, আফসানার মতো আরও তিন শতাধিক মানুষ বস্তা ভরে প্লাস্টিক নিয়ে এসেছেন। কেউ ২ কেজি, কেউ ১০ কেজি আবার কেউ নিয়ে এসেছেন ২০ কেজি প্লাস্টিক। এইসব প্লাস্টিক জমা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নিজের পছন্দমত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। এখানে প্রায় ১৬ ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য রয়েছে। প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে ভিন্নধর্মী বাজারের আয়োজন করে ফাউন্ডেশনটি। 

ব্যাগভর্তি বাজার পেয়ে আফসানা বেগম বলেন, অভাবের সংসারে নুন আন্তে পান্তা শেষ হয়ে যায়। আজকে প্লাস্টিক জমা দিয়ে চিনি, মুরগি পেলাম। এটা আমাদের মতো নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য অনেক বড় উপকার। দুবেলা পেট ভরে তৃপ্তি করে খাওয়া যাবে। যারা আয়োজন করেছে আল্লাহ তাদের ভালো করুক।

প্লাস্টিক দিয়ে পণ্য নিতে আসা জুলেখা বেগম বলেন, বর্তমান সময়ে সব জিনিসের দাম অনেক বেশি। সেই তুলনায় এই অল্প পরিমাণ প্লাস্টিক দিয়ে আমাদের যেই পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে তাতে আমি খুব খুশি। কিছুদিন পরপর যদি এমন আয়োজন করা হয় তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো হয়।

আলামিন নামে আরেকজন রিকশাচালক বলেন, আমি ১৫ কেজি প্লাস্টিক নিয়ে এসেছিলাম সেটা দিয়ে আজকে ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়েছি। মুরগি, মাছসহ বিভিন্ন ধরনের বাজার নিয়েছি। অনেকদিন পরে আমরা এরকম একটা বাজার করতে পেরেছি তাতে খুব খুশি লাগতেছে। আমার পরিবার অনেক খুশি হবে। আজ ভালো খাওয়া-দাওয়া হবে। 

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবক শিহাব মিয়া বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোরের আয়োজন করা হয়েছে। জেলার তিন শতাধিক পরিবারের মাঝে আমরা ১৬ প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দিচ্ছি। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে স্বস্তির পাশাপাশি প্লাস্টিক ব্যবহারে অনুৎসাহী করা হচ্ছে। 

ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা সরদার শাহীন বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহারে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এতে ভয়াবহ হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে চারপাশ। বিদ্যানন্দের ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। এতে সচেতনতার পাশাপাশি স্বস্তি পাচ্ছেন উপকারভোগীরা। এমন আয়োজন অব্যহত থাকুক।

আরিফ হাসান/আরকে 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *