আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ঘৃণা, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী ওরফে অবসর। সে সময় দু-চারটি মামলা হলেও তা কিছু দুর্নীতিবাজ ও অসৎ নেতাদের কারণে ব্যক্তিগত ক্ষোভে বা আক্রোশে হয়েছে। সেজন্য কিছু অন্যায়কারী ও অসৎ নেতাদের কারণে অসংখ্য নেতাকর্মীদের ওপর প্রতিশোধ না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ঘৃণা, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী ওরফে অবসর। সে সময় দু-চারটি মামলা হলেও তা কিছু দুর্নীতিবাজ ও অসৎ নেতাদের কারণে ব্যক্তিগত ক্ষোভে বা আক্রোশে হয়েছে। সেজন্য কিছু অন্যায়কারী ও অসৎ নেতাদের কারণে অসংখ্য নেতাকর্মীদের ওপর প্রতিশোধ না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় অজ্ঞাত স্থান থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজ আইডিতে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই অনুরোধ জানান। সেখানে তারা নিজ ঘরের আগুনে পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন।
ওই পোস্টে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা লেখেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪, প্রায় ষোল বছর আমাদের প্রাণের সংগঠন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। কখনোই আমরা ঘৃণার রাজনীতি করিনি, কখনোই প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি করিনি। আমাদের সরকারের আমলে জয়পুরহাটে হাতেগোনা দু-চারটি মামলা হয়েছিল কিন্তু তা ছিল ব্যক্তিগত ক্ষোভে-আক্রোশে। হাতেগোনা কিছু দুর্নীতিবাজ ও অসৎ নেতাদের কারণে। সেই হাতেগোনা কিছু অন্যায়কারী ও অসৎ নেতাদের কারণে জয়পুরহাট জেলার হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর প্রতিশোধের নেশায় মেতে না ওঠার অনুরোধ তার।
তিনি তার পোস্টে লেখেন, নিজ ঘরের আগুনে আমরা তো পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে গেছি। ব্যক্তিগতভাবে আমার দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন।
তিনি আরও লেখেন, শুরুতে প্রিয় নেতাকর্মীদের নামে দু-একটা মামলা হলেও বিচলিত ও বিব্রতবোধ করিনি। কিন্তু এ কয়দিনে জয়পুরহাট জেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে ঢালাওভাবে ডজনকে-ডজন মামলা দিয়ে প্রমাণ করছেন, আপনারা ঘৃণার মহারণ তৈরি করছেন। প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের মঞ্চস্থ তৈরি করছেন। (মহান আল্লাহ আমাকে কতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন জানি না) খুব দ্রুত, বিপ্লবী, ফাইটার ও সংগ্রামের জনক খ্যাত সংগঠন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজার বেশে কামব্যাক করবে (ইনশাআল্লাহ)। দৃঢ়চিত্তে বলতে পারি, আমরা কখনোই ঘৃণা ও প্রতিশোধের রাজনীতি করিনি আর করবোও না।
সবশেষে আওয়ামী লীগের এই নেতা তাদের ওপরে নির্বিচারে হামলা, পাইকারিহারে মামলা করা হয়েছে দাবি করে এসবের বিচারের ভার জয়পুরহাট জেলার ১০ লাখ আমজনতার ওপরে ছেড়ে দিয়েছেন।
জানতে চাইলে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ পর্যন্ত আটটি মামলায় আমার নাম এসেছে। এসব মামলা মাথায় নিয়ে এখানে-ওখানে আত্মগোপন থাকতে হচ্ছে। ফেসবুকের এই পোস্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দলের পক্ষেই পোস্টটি করেছি। আমি ভালো বা মন্দ বললে তা তো দলের ওপরই বর্তাবে। এই সময়ে দলীয় নেতারা আত্মগোপন রয়েছে। আমি তবুও সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ আছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে যে-সব মামলা হয়েছে সেগুলো দলীয়ভাবে নয়। সেগুলো ব্যক্তিগত ছিল। আর পুলিশ বাদী হয়ে যে-সব মামলা করেছে, সেগুলোর দায়িত্ব তো আমাদের না। তবে সে সময়ে দলীয়ভাবে কোনো মামলা হয়নি, কেউ আক্রোশে ব্যক্তিগতভাবে করেছে। আর দু-একটি মামলা দলীয়ভাবে হয়ে থাকলে তার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে রাজধানীতে কয়েক লাখ মানুষের ঢল নামলে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
এদিকে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জয়পুরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদু, জয়পুরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনসহ জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী আত্মগোপন রয়েছেন।
চম্পক কুমার/এএমকে