পুলিশে এসআই নিয়োগে প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

পুলিশে এসআই নিয়োগে প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশে উপ-পরিদর্শক (এসআই-নিরস্ত্র) পদে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আবেদন চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। এ পদে নারী ও পুরুষ উভয় প্রার্থীই আবেদনের সুযোগ পাবেন। তবে যোগ্য প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় কয়েকটি ধাপে পরীক্ষা নেওয়া হয়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশে উপ-পরিদর্শক (এসআই-নিরস্ত্র) পদে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আবেদন চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। এ পদে নারী ও পুরুষ উভয় প্রার্থীই আবেদনের সুযোগ পাবেন। তবে যোগ্য প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় কয়েকটি ধাপে পরীক্ষা নেওয়া হয়।

বিভিন্ন ধাপের বাছাই প্রক্রিয়া শেষে মনোনীত প্রার্থীদের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (নিরস্ত্র) হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে এক বছরমেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হবে। মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে তাদের শিক্ষানবিশ ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (নিরস্ত্র) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। অন্যান্য সরকারি চাকরির মতোই শিক্ষানবিশ সময় শেষে চাকরিতে স্থায়ীকরণ করা হবে।

আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্যে এসএসসি, এইচএসসি, ডিগ্রি/স্নাতক/সমমান পরীক্ষার ফলাফল এবং উচ্চতার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত নিয়োগবিধি অনুযায়ী  প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে নির্দিষ্টসংখ্যক যোগ্য প্রার্থী শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাইকরণসহ শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করা হবে। 

প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিংয়ে বাছাই করা প্রার্থীদের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত তারিখ, সময় ও স্থানে শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাইকরণসহ শারীরিক সহনশীলতা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এ ধাপে প্রার্থীকে সাতটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। ইভেন্টগুলো হলো দৌড়, লং জাম্প, হাই জাম্প, পুশ আপ, সিট আপ, ড্র্যাগিং ও রোপ ক্লাইমিং।

ইংরেজি এবং বাংলা রচনা ও কম্পোজিশনের ১০০ মার্কসের পরীক্ষা ৩ ঘণ্টায় দিতে হবে। সাধারণ জ্ঞান ও গণিতের ওপর ১০০ মার্কসের পরীক্ষার জন্য ৩ ঘণ্টা বরাদ্দ থাকে। তারপর ৫০ মার্কসের মনস্তত্ব পরীক্ষা ১ ঘণ্টা দিতে হবে।

পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরের নিয়োগ পরীক্ষায় কমন কয়েকটি টপিক থেকেই বেশি প্রশ্ন এসে থাকে। এটা আরো ভালো বোঝা যাবে, বিগত সালের প্রশ্ন নিয়মিত অনুশীলন করলে। বিগত সালের প্রশ্নের সমাধান আছে, এমন একটা ভালো বই থেকে এ অনুশীলন করলে ভালো একটা প্রস্তুতি হয়ে যাবে।

ইংরেজি বিষয়ের জন্য মূলত রচনা, শূন্যস্থান পূরণ, বাক্য তৈরি, চিঠি লেখা এবং বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ বেশি আসে। রচনার জন্য সমসাময়িক আলোচিত বিষয় পড়তে পারেন। তাই মনোযোগ দিয়ে নিয়মিত পত্রিকা পড়তে হবে। পত্রিকা থেকে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ও লেখা নোট করে রাখতে হবে।

অনুবাদ অংশে ভালো করার জন্য ইংরেজি পত্রিকা থেকে নিজে নিজে বাংলা করার চেষ্টা করতে হবে। একই শব্দ বারবার ব্যবহার না করে নতুন নতুন শব্দ ব্যবহার করলে লেখার মান ভালো হয়। তবে শব্দচয়ন যেন সুন্দর ও সাবলীল হয়।

বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন অংশে গত বছরগুলোতে যে বিষয়গুলো বেশি এসেছে, সেগুলো হলো রচনা, ভাবসম্প্রসারণ, পত্রলিখন, এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা, সমাস, কারক, বিভক্তি ও ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ।

বাংলা রচনার জন্য ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন, রোহিঙ্গা ইস্যু, পর্যটন, সুশাসন, সংবিধান, বিশ্বায়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, জলবায়ুর পরিবর্তন, মুক্তবাজার অর্থনীতি এ বিষয়ের ওপর ভালোমতো প্রস্তুতি নিলে ফল পাওয়া যেতে পারে। এ অংশ ভালো করার জন্য সাম্প্রতিক ঘটনার দিকে লক্ষ রাখতে হবে। ভাবসম্প্রসারণের জন্য নবম-দশম শ্রেণির রচনা অংশের বোর্ড বইটি দেখলে হবে।

সাধারণ জ্ঞানের জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বের চলতি বিষয়গুলোর ওপর সংক্ষিপ্ত কিংবা বড় প্রশ্ন আসতে পারে। ইংরেজি শব্দের পূর্ণরূপ, সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থান, রাজধানী, মুদ্রা, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আঞ্চলিক ও বিশ্ব রাজনীতি, বিশ্ব অর্থনীতি, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সংস্থা, এমডিজি, এসডিজি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি গোয়েন্দা সংস্থাসহ পুলিশ-সম্পর্কিত প্রশ্নও এসে থাকে। এ ছাড়া ভৌগোলিক বিষয়াবলি, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও প্রযুক্তিবিষয়ক বিষয়গুলোর ওপর প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে।

এ অংশের জন্য আপনাকে সমার্থক, বিপরীত শব্দ ও শব্দ লেখা ভালোভাবে অনুশীলন করতে হবে। ছোট ছোট গাণিতিক সমস্যা, শব্দের সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য, বিখ্যাত লেখক এসব বিষয়ের ওপর প্রস্তুতি নিতে হবে। সময় ভাগ করে পড়তে হবে। এখন থেকেই নিয়মিত জাতীয় দৈনিকগুলো পড়লে অবশ্যই ভালো ফল আসবে।

লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নির্ধারিত স্থান, তারিখ ও সময়সূচি অনুযায়ী কম্পিউটার-দক্ষতা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এ পরীক্ষায় মাইক্রোসফট অফিস, ওয়েব ব্রাউজিং এবং ট্রাবলস্যুটিং বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।

এ ধাপে প্রার্থীদের ৫০ নম্বরের বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। লিখিত, মনস্তত্ত্বসহ বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে নিয়োগবিধি মোতাবেক উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

লিখিত, মনস্তত্ত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকায় নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য মনোনয়ন সিলেকশন বোর্ড কর্তৃক সুপারিশ করা প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য ঘোষণা ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্নের পর সন্তোষজনক বিবেচনায় মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হবে। ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (নিরস্ত্র) হিসেবে নির্বাচিত প্রার্থীদের বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সারদা, রাজশাহীতে এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে হবে।

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *