পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে মিলছে চাল-ডাল-তেলসহ ১৩ পণ্য

পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে মিলছে চাল-ডাল-তেলসহ ১৩ পণ্য

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়ে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের উপকরণ পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে চাল, ডাল, তেল, চিনি ও লবণসহ ১৩ ধরনের নিত্যপণ্য দিচ্ছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। পরিবেশ দূষণরোধে সারা দেশের মতো নীলফামারীতেও এমন উদ্যোগ নিয়েছে ফাউন্ডেশনটি।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়ে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের উপকরণ পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে চাল, ডাল, তেল, চিনি ও লবণসহ ১৩ ধরনের নিত্যপণ্য দিচ্ছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। পরিবেশ দূষণরোধে সারা দেশের মতো নীলফামারীতেও এমন উদ্যোগ নিয়েছে ফাউন্ডেশনটি।

পরিত্যক্ত প্লাস্টিক জমা দিয়ে পণ্য পাওয়ায় খুশি এ অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শহরের আশা কমিউনিটি সেন্টারে ৪০০ পরিবারকে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে নিত্যপণ্য দেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

সারাদিন প্রায় ৩ শতাধিক নারী-পুরুষ প্লাস্টিকের বিনিময়ে নিত্যপণ্য কেনার কার্যক্রমে অংশ নেন।

প্লাস্টিক নিয়ে আশা শিউলি বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের বাড়ির পাশে এসব পণ্য পড়ে থাকতো, এতে মশা জন্ম নিতো। সেখান থেকে এসব প্লাস্টিক তুলে এনে যে এতো সুন্দরভাবে এমন বাজার করার সুযোগ পাবো কখনো ভাবিনি।

নতুন বাজার থেকে রিকশা ভর্তি করে প্লাস্টিক নিয়ে এসেছেন রেজিয়া বেগম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা যদি এসব প্লাস্টিক বাইরে বিক্রি করতাম, তাহলে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি পাইতাম। কিন্তু এখানে এনারা সুযোগ দিচ্ছেন, এই রকম সুযোগ কেউ কখনো দেয়নি। আমরা চাই, তারা মাঝে মধ্যেই এমন আয়োজন করুক।’

কাজলী আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘এটা খুব ভালো কাজ। এটা শোনার পর আমাদের বাড়ির আশপাশের সব প্লাস্টিক খুঁজে তুলে নিয়ে আসছি। এর ফলে আমাদের বাড়ির আশপাশও পরিষ্কার হইলো এবং এখানে এসে অনেকগুলো পণ্য পাইলাম। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য অনেক ভালো একটি বিষয়, যে দাম জিনিস পাতির, তেল, ডিম, ডাল নিলাম অনেকগুলো টাকা বাঁচলো।’

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী রানা আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোর। এটার উদ্দেশ্য হচ্ছে, পুরাতন প্লাস্টিকের বিনিময়ে আমরা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দিচ্ছি। আমরা চাই, পরিবেশ সুন্দর হোক। এর পাশাপাশি বর্তমান বাজারে যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সাধারণ মানুষ যাতে আমাদের কাছ থেকে কিছু পণ্য নিয়ে তারা কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে পারে।

তিন আরও বলেন, চাল, ডাল, তেল, লবণসহ মোট ২৩টি পণ্য আমরা আজকে আমরা দিচ্ছি। ১ কেজি প্লাস্টিক দিলে ১ কেজি চাল পাবে, ৩ কেজি প্লাস্টিক দিলে ১ কেজি সয়াবিন তেল পাবে, ৩ কেজি প্লাস্টিক ১ কেজি চিনি, ৩ কেজি প্লাস্টিক দিলে ১ কেজি ডাল পাবে, ১ কেজি প্লাস্টিক দিলে ৬টি ডিম পাবে। এরকম ১৩টি পণ্য রয়েছে। যে যত বেশি প্লাস্টিক আনবে সে তত বেশি পণ্য পাবে।

পরিবেশ রক্ষায় নীলফামারীসহ ৬৪টি জেলায় ‘প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোর’ স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। ২০২২ সালে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্লাস্টিক দূষণ কমানোর জন্য একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে যার নাম ‘প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোর’। যেখানে মানুষ তাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের খালি পাত্র, বোতল বা পলিথিন এক্সচেঞ্জ করে নিতে পারেন চাল, ডাল, তেল, চিনি ও লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। এতে স্থানীয়দের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা যেমন পূরণ হয়েছে, ঠিক তেমনই কমেছে পরিবেশ দূষণ।

স্থানীয় অধিবাসীরা নিজেরাই সমুদ্র সৈকত থেকে কুড়িয়ে প্লাস্টিক বিদ্যানন্দের স্টোরে জমা দিয়ে নিত্যপণ্য নিয়ে যান।

শরিফুল ইসলাম/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *