চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এ ছাড়া পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলের প্রায় ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি বাঁধ ভেঙে ডুবে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এ ছাড়া পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলের প্রায় ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি বাঁধ ভেঙে ডুবে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ।
স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন তারা। গবাদিপশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। বন্যায় বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি, আমবাগান ও বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। বিশুদ্ধ পানিসহ খাবার সংকট দেখা দেওয়ায় তারা সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ভারতের ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় পদ্মা তীরবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ চরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে থাকলেও নিম্নাঞ্চল হওয়ায় ডুবে গেছে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ও আলাতুলী ইউনিয়নসহ কয়েকটি এলাকার শত শত বাড়িঘর। মানুষ বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ আবার বাড়িঘর ভেঙে সরিয়ে নিয়েছেন নিরাপদ জায়গায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র, চন্দ্রনারায়ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয়, নারায়ণপুর সর্দারপাড়া জামে মসজিদ, নারায়ণপুর জামে মসজিদ, নারায়ণপুর বান্নাপাড়া জামে মসজিদ, দেবিপুর মসজিদসহ আরও ৩-৪টি মসজিদ বিলীন হয়ে গেছে।
নারায়ণপুর বান্নাপাড়া জমে মসজিদের ইমাম মাওলানা শামীম রেজা মিলন বলেন, প্রতিবছর এই ইউনিয়ন ভাঙনের কবলে পড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। আমি যে মসজিদে ইমামতি করি সেই মসজিদসহ বেশ কয়েকটি মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সরকারের কাছে আবেদন জানায় তারা যেন আমাদেরকে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেন।
নারায়ণপুর ইউনিয়নের সদ্দারপাড়া এলাকার কৃষক আব্দুস সামাদ বলেন, ৩০ বিঘা জমিতে মাষকলাই বুনেছিলাম। পানিতে ডুবে সব শেষ হয়ে গেছে। গরু-ছাগল নিয়ে কোথায় যাব, কি খাব কিছুই নেই, সব শেষ। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সহযোগিতা করলে কিছুটা উপকার হত।
নারায়ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন বলেন, চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা প্রতিবছর পদ্মা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে। এখন পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাছমিনা খাতুন বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় দ্রুত ত্রাণসহ ক্ষতিগ্রস্তদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
মো. আশিক আলী/এমজেইউ