নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট ঘেরাও চেষ্টা, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার মৃত্যু

নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট ঘেরাও চেষ্টা, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার মৃত্যু

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে যুবদলের দুই কর্মীকে আটকের প্রতিবাদে উপজেলা পরিষদ–সংলগ্ন নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট ঘেরাওয়ের চেষ্টার সময় মো. শরীফ (৩২) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। 

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে যুবদলের দুই কর্মীকে আটকের প্রতিবাদে উপজেলা পরিষদ–সংলগ্ন নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট ঘেরাওয়ের চেষ্টার সময় মো. শরীফ (৩২) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. শরীফ পেশায় অটোরিকশাচালক। তিনি আজিমপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

স্থানীয়দের দাবি, নৌবাহিনীর মারধরে মৃত্যু হয়েছে শরীফের। যদিও এখন পর্যন্ত এবিষয়ে নৌবাহিনীর তরফ থেকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নৌবাহিনীর বরাত দিয়ে বলেছেন,  ‘তারা এমন কিছু করেনি।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে আজিমপুর ও রহমতপুর ইউনিয়নে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের অভিযানে যায় নৌবাহিনীর একটি দল। ওই সময় আবু তাহের (৪২) ও মো. খোকন (৪০) নামে যুবদলের দুই কর্মীকে আটক করা হয়। তাদের আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যার পর থেকে উপজেলা পরিষদ–সংলগ্ন মান্নান মার্কেটের সামনে কয়েকশ নারী-পুরুষ উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ করেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তারা মিছিলসহ নৌবাহিনী কন্টিনজেন্টের দিকে রওনা দিলে নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেন।

একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে নিবৃত্ত করতে নৌবাহিনী সদস্যরা লাঠিপেটা করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় মো. শরীফসহ কয়েকজন আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে শরীফকে কয়েকজন ব্যক্তি উদ্ধার করে পাশের সন্দ্বীপ মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ওই হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক মো. রায়হান জানান, রাত ৮টার দিকে কয়েকজন ব্যক্তি শরীফকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ সময় পরীক্ষা করে দেখা যায়, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। 

মৃত্যুর কারণ কী— জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, তার শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে মৃত্যুর কারণ।

এ ছাড়া, এই হাসপাতালে হাতে আঘাত পাওয়া তিনজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।

সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিগ্যান চাকমা বলেন, ‘নৌবাহিনী অবৈধ অস্ত্র রাখার সংবাদ পেয়ে দুই ব্যক্তিকে আটক করলে প্রায় দুই থেকে আড়াই শ নারী-পুরুষ সমবেত হয়ে কন্টিনজেন্টের সামনে চলে গেলে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের প্রতিনিধি ঠিক করে আলাপ করতে বলা হয়। তারা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। কিন্তু কীভাবে আহত বা নিহত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে, তা নিশ্চিত হতে পারিনি। নৌবাহিনী বলেছে, তারা এমন কিছু করেনি।’

রাত ১১টায় এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু তাহের সংবাদ সম্মেলন করে জানান, ‘মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। পারস্পরিক সহযোগিতায় সত্য উদঘাটনের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি সমাধান করা হবে। দলীয় নির্দেশ ছাড়া এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন হঠকারী পোস্ট না করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

আরএমএন/এমজে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *