নোয়াখালীতে বন্যায় মৃত্যু ১২, এখনো পানিবন্দি ১২ লাখ মানুষ

নোয়াখালীতে বন্যায় মৃত্যু ১২, এখনো পানিবন্দি ১২ লাখ মানুষ

নোয়াখালী জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় ১২ লাখ মানুষ। বন্যাকবলিত অধিকাংশ এলাকার সড়কের পানি নামতে শুরু করেছে। তবে টানা বৃষ্টিতে বেশির ভাগ বসতঘরে এখনো পানি রয়ে গেছে।

নোয়াখালী জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় ১২ লাখ মানুষ। বন্যাকবলিত অধিকাংশ এলাকার সড়কের পানি নামতে শুরু করেছে। তবে টানা বৃষ্টিতে বেশির ভাগ বসতঘরে এখনো পানি রয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার আট উপজেলায় পানিবন্দি আছে ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৩০০ জন মানুষ। ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ১ হাজার ২৫ জন মানুষ। ৬ শিশুসব জেলায় বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। সরকারিভাবে ১২৪ ও বেসরকারিভাবে ১৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, ১৮০০ মেট্রিক টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ১৫ লাখ টাকার গো খাদ্য বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বন্যাকবলিত আটটি উপজেলার মধ্যে সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সদর, চাটখিল, সোনাইমুড়ী ও কবিরহাট উপজেলার অধিকাংশ সড়কের পানি নামতে শুরু করেছে। তবে টানা বৃষ্টিতে বেশির ভাগ বসতঘরে এখনো পানি। খুব ধীরে ধীরে পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে, যা মানুষের জন্য আরও কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বেগমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মুনিম ফয়সাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বেশির ভাগ খাল ও পানি নিষ্কাশনের পথগুলো ভরাট ও বেদখল হয়ে যাওয়ার কারণে এবারের অতিবৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপ নিতে পারেনি। এ কারণে এখানে প্রথমত জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, পরবর্তীতে তা ভয়াবহ বন্যায় রূপ নিয়েছে। শুধু তাই নয়, আজ জেলায় কোনো বৃষ্টি না হলেও বন্যা পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। এতে একদিকে বন্যা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। অন্যদিকে বন্যার ক্ষতির পরিমাণও দিন দিন বাড়ছে।

ঢাকা থেকে নোয়াখালীতে বন্যার্তদের সহায়তা করতে আসা আল খায়ের ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর সজিব তারেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত দুই মাস ধরে নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতা। পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা ভালো থাকলে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যেতো। কয়েকদিন পর পর বৃষ্টি হয়। মানুষ ফের পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হাসান খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলায় বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। তারমধ্যে নোয়াখালী সদরে দুইজন, সেনবাগে চারজন, বেগমগঞ্জে তিনজন, সুবর্ণচরে দুইজন ও কবিরহাটে একজন। জেলার আট উপজেলায় পানিবন্দি আছে ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৩০০ জন মানুষ। ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ১ হাজার ২৫ জন মানুষ।

চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলেও আস্তেধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে পানিবন্দি মানুষ আগের মতোই আছে। আমরা বিভিন্ন খাল উদ্ধার করে প্রবাহ স্বাভাবিক করেছি। পাশাপাশি খাল উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টিতে জেলা শহরেও পানি বেড়েছে। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে তা দ্রুত নেমে যাবে। আমরা ইতোমধ্যে গাবুয়া খালসহ একাধিক খাল পরিষ্কার করেছি। ছাত্র-জনতা অবৈধ বাঁধ কেটে দিয়ে পানির চলাচল স্বাভাবিক করছে। আশা করি বৃষ্টি না হলে পানি খুব দ্রুতই নেমে যাবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে কাজ করছি।

হাসিব আল আমিন/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *