চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানা এলাকায় নেচে গেয়ে উল্লাস করতে করতে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে নগর পুলিশের একাধিক টিম।
চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানা এলাকায় নেচে গেয়ে উল্লাস করতে করতে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে নগর পুলিশের একাধিক টিম।
নগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। যদিও এ ঘটনায় আগেই হত্যা মামলা হয়েছিল। এখন আসামিদের কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মূলত ঘটনাটি ঘটে গতমাসের ১৩ তরিখে। ওই সময় থানায় পুলিশ ছিল না বললেই চলে। এর সুযোগ নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী কয়েকজন তরুণও এ হামলায় অংশ নেয়।
কারা জড়িত— জানতে চাইলে পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে না। কেউ হয়ত ভুল বুঝিয়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী ছাত্র-তরুণদের হাতে ভুক্তভোগীকে তুলে দিয়েছে। যাই হোক এটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। নগর পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নেমেছে। আশা করি শিগগিরই সুসংবাদ মিলবে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুঁটির সঙ্গে বেঁধে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শাহাদাতের স্ত্রী সেটি দেখে নিশ্চিত করেন মারধরের শিকার ব্যক্তি তার স্বামী। যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একদল যুবক ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা’— গানটির সঙ্গে নেচে নেচে উল্লাস করছেন আর দুই হাত খুঁটিতে বেঁধে এক যুবককে পেটাচ্ছেন। মার খেয়ে ভুক্তভোগী যুবকের মাথা ঢলে পড়ে এবং একপর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভুক্তভোগী যুবকের নাম শাহাদাত হোসেন (২৪)। তিনি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থানার পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভুঁইয়া বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। পরিবার নিয়ে শাহাদাত চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে থাকতেন।
গত ১৪ আগস্ট নগরের প্রবর্তক মোড়ের পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে থেকে পুলিশ শাহাদাতের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ১৫ আগস্ট ভুক্তভোগী শাহাদাতের চাচা মোহাম্মদ হারুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৩ আগস্ট দুপুর দুইটার দিকে কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন শাহাদাত। তার স্ত্রী শারমিন সন্ধ্যার দিকে ফোন করলে তিনি জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় ফিরবেন। রাত বেশি হওয়ার পরও শাহাদাত বাসায় না ফেরায় তাকে আবার ফোন করেন শারমিন। কিন্তু তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এর পরদিন শাহাদাতের চাচা সকাল ৯টার দিকে ফেসবুকে দেখেন, নগরের প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনাশাহ মিয়া (রহ.) মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশে তার ভাতিজার মরদেহ পড়ে আছে।
এমআর/এমজে