নিখোঁজ হওয়ার ৬ দিন পর অচেতন অবস্থায় মিলল কদরুলের সন্ধান

নিখোঁজ হওয়ার ৬ দিন পর অচেতন অবস্থায় মিলল কদরুলের সন্ধান

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার সহযোদ্ধা কদরুল হাসানকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নগরীর ময়লাপোতা মোড় এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার ৬ দিন পর তাকে উদ্ধার করা হলো।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার সহযোদ্ধা কদরুল হাসানকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নগরীর ময়লাপোতা মোড় এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার ৬ দিন পর তাকে উদ্ধার করা হলো।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪টার দিকে লবণচরা দারোগার লেনের সুলতানিয়া আহম্মেদ জামে মসজিদের সামনে থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে কদরুলকে খুমেক হাসপাতালের ৫-৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ভোরে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে মসজিদের মুসল্লীরা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর জ্ঞান ফেরে কদরুলের।

খুলনার লবণচরা থানা পুলিশের ওসি পলাশ কুমার দাস জানান, বুধবার ভোরে নগরীর লবণচরা থানার দারোগার লেনের সুলতানিয়া আহম্মেদ জামে মসজিদের সামনে কদরুলকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে গত ৬ দিন তিনি কোথায় কী অবস্থায় ছিলেন তা এখনো জানা যায়নি। তিনি সুস্থ হলে তার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়গুলো জানা যাবে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে কদরুল হাসান জানান, শারীরিকভাবে নির্যাতন করা না হলেও তাকে মানসিকভাবে চাপে রাখা হয়েছিল। ৫ দিনের প্রায় পুরো সময়টা তিনি একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায় ছিলেন।

তিনি বলেন, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি, বিস্তারিত ঘটনা বলা কঠিন। আমাকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, যাতে মাথা চাড়া দিয়ে না উঠি। কোথায় ছিলাম জানি না। তবে অন্ধকারে ছিলাম এইটুকু জানি। যেখানে ছিলাম, সেখানে অন্ধকার ছিল। এছাড়া আর কিছুই জানি না। শারীরিক কোনো নির্যাতন করা হয়নি, মানসিক টর্চার করা হয়েছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর নগরীর ময়লাপোতা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় কদরুল। নিখোঁজের পর পর সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছিল। সেই জিডির প্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত শুরু করি। বুধবার ভোরে লবনচরা থানা এলাকার একটি মসজিদের পাশে তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে জিজ্ঞাসা করছি, এ ঘটনার পেছনে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

এদিকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি এমন ঘটনা বন্ধের দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। কদরুল নগরীর সরকারি হাজী মোহাম্মদ মুহসীন কলেজের ছাত্র। পাশাপাশি শেখপাড়া এলাকায় পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পার্টটাইম চাকরি করেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর বেলা ৩টার দিকে তিনি নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার সোনার বাংলা গলির বাসা থেকে বের হন। এরপর নগরীর ময়লাপোতা এলাকায় একটি মসজিদ চত্বরে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণের প্যাকেট করেন। কিন্তু রাতে বাড়ি ফেরার পথে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ৬ সেপ্টেম্বর খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় জিডি করেছিলেন। কদরুলকে ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ও পালন করেছিলেন পরিবার ও শিক্ষার্থীরা।

মোহাম্মদ মিলন/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *