নাটিকা হৃদয়ে চব্বিশ, দেখে আপ্লুত দর্শক

নাটিকা হৃদয়ে চব্বিশ, দেখে আপ্লুত দর্শক

মৌলভীবাজার সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো হৃদয়ে চব্বিশ নাটিকা। নাটিকায় আয়না ঘরের দৃশ্য, জুলাই আন্দোলনে শহীদ আবু সাইদ, শহীদ মুগ্ধসহ নির্মম হত্যাকাণ্ড ও ৫ আগস্টের বিজয়ের ঘটনা ফুটে ওঠে। যা দেখে দর্শকরা আপ্লুত হয়ে পড়েন।

মৌলভীবাজার সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো হৃদয়ে চব্বিশ নাটিকা। নাটিকায় আয়না ঘরের দৃশ্য, জুলাই আন্দোলনে শহীদ আবু সাইদ, শহীদ মুগ্ধসহ নির্মম হত্যাকাণ্ড ও ৫ আগস্টের বিজয়ের ঘটনা ফুটে ওঠে। যা দেখে দর্শকরা আপ্লুত হয়ে পড়েন।

নাটিকায় অভিনয় করে মৌলভীবাজার সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদ, মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ (মৌসাস), জলপ্রপাত শিল্পীগোষ্ঠী ও মনু কালচারাল গ্রুপ। হৃদয়ে চব্বিশ নাটিকা রচনা করেন তোফায়েল ইসলাম।

হৃদয়ে চব্বিশ নাটিকার অভিনয় শিল্পী সাইফ উদ্দিন বলেন, চব্বিশ সাল হচ্ছে বাংলাদেশিদের জন্য ঐতিহাসিক একটি বছর। এই বছরেই বাংলাদেশিরা ফিরে পেয়েছে তাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। এর ফলে ফিরে পেয়েছে বাঁচার অধিকার, কথা বলার অধিকার। যা আমাদের শহীদ আবু সাইদ, মুগ্ধ সহ আহত-নিহতদের ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়। নাটিকায় এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে মৌলভীবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়াম শুরুতে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মামুনুর রশীদ। এরপর একে একে শুরু হয় হামদ-নাত, ইসলামী গান, দেশের গান, কাওয়ালি, কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা, মায়ের গান ও নাটিকা।

গানে গানে মেতে উঠে পুরো শিল্পকলা একাডেমি। একের পর এক গান আর অভিনয়ে মুগ্ধ হন দর্শক। সহস্রাধিক দর্শকে ভরপুর ছিল পুরো অডিটোরিয়াম। মৌসাসের খুদে শিশু শিল্পীদের পরিবেশনা সবাইকে আকর্ষিত করে।

মৌলভীবাজার সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ রুহুল আমীন ও সেক্রেটারি মো. শহিদুল ইসলামের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী, মহাসচিব ইয়ামীর আলী, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মনসুরুল হক, মৌলভীবাজার শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আলাউদ্দিন শাহ, অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসাইন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সবার নজর কাড়েন সিলেট থেকে আসা জীবনমুখী ও সুফি গানের জনপ্রিয় শিল্পী শালীন আহমদ। তিনি তার বিখ্যাত মায়ের গান পরিবেশন করে মুগ্ধ করেন দর্শকদের।

অনুষ্ঠান উপভোগ করতে আসা ব্যবসায়ী রাসেল মজুমদার বলেন, আমি আমার পরিবার ও সন্তান নিয়ে এসেছি এই অনুষ্ঠান দেখতে। অনুষ্ঠানে গানসহ বিভিন্ন পরিবেশনা খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ভালো লেগেছে হৃদয়ে চব্বিশ নাটিকা। নাটিকায় জুলাই আন্দোলনে স্বৈরাচার এর হামলা তুলে ধরা হয়েছে। যা দেখে আমি আপ্লুত হয়ে পড়েছি। কীভাবে জুলাই মাসে অত্যাচার চালিয়েছে তৎকালীন স্বৈরাচার সরকার।

শিক্ষার্থী তারেক আজিজ বলেন, এই প্রথম আমি এ রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসেছি। পুরো অনুষ্ঠান মাতিয়ে রাখেন শিল্পীরা। হৃদয়ে চব্বিশ নাটিকা দর্শক মাতিয়েছে। আয়না ঘরের দৃশ্য মনে দাগ কেটেছে। খুব সুন্দরভাবে আয়না ঘরের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। স্বৈরাচার সরকারের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে নতুন নতুন নাটিকা মঞ্চস্থ হলে জনগণ বুঝতে পারবে। আর এই অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ফুটে উঠবে বিগত অপকর্ম।

অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক স্থানীয় মৌলভীবাজার সমাচার পত্রিকার সম্পাদক ও বিশিষ্ট ছড়াকার আবদাল মাহবুব কোরেশি বলেন, অনুষ্ঠানে মূল আকর্ষণ ছিল হৃদয়ে চব্বিশ নাটিকা। নাটিকায় তুলে ধরা হয়েছে শহীদ আবু সাইদ, শহীদ মুগ্ধ, জুলাই হত্যাকাণ্ড এবং বর্বর স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আয়না ঘরের কাহিনী। নাটিকা দেখে দর্শক খুব উপভোগ করেছেন। অনেকেই মাতোয়ারা হয়েছেন আবার অনেকেই আপ্লূত হয়েছেন।

সভাপতির বক্তব্যে মৌলভীবাজার সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি সৈয়দ রুহুল আমীন বলেন, আমাদের আজকের এই অনুষ্ঠান জানি না কতটুকু আনন্দ দিতে পেরেছে দর্শকদের। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মৌলভীবাজারে অন্যরকম একটি যাত্রা শুরু হলো। আমরা চাই সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা গড়ে উঠুক, আকাশ সংস্কৃতি মুক্ত হোক দেশ। ভবিষ্যতে দর্শকদের মাতাতে আমরা আরও নতুন নতুন পরিবেশনা নিয়ে আসব।

আশরাফ আলী/এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *